স্টাফ রিপোর্টার : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার দিনকে কেন্দ্র করে সোমবার ধানমন্ডি ৩২ এলাকায় সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা দুইটি স্কেভেটর নিয়ে শেখ মুজিবের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

সোমবার ১৭ নভেম্বর সকালে ট্রাইব্যুনালের সামনে দায়িত্ব পালন শেষে বৈশাখী টেলিভিশনের সাংবাদিক তন্ময় উদ্দৌলা অফিসের নির্দেশনায় বেলা ১২টার দিকে ধানমন্ডি ৩২-এ পৌঁছান। এসময় পুরো এলাকা এপিসি, জলকামান ও ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। বিভিন্ন দিক থেকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা জড়ো হতে থাকায় দুপুরের পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়।

দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত থেমে-থেমে একাধিক সংঘর্ষ হয়। জনতার ইটপাটকেলের জবাবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গের চেষ্টা চালায়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে লাইভ এবং ফুটেজ সংগ্রহে ব্যস্ত ছিলেন সাংবাদিক তন্ময় উদ্দৌলা।

বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে, রাসেল স্কোয়ার–সায়েন্সল্যাবমুখী সড়কে বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ এগিয়ে গেলে হঠাৎ ছোড়া এক টিয়ারশেলের ধোঁয়ায় তন্ময় উদ্দৌলা গুরুতরভাবে আক্রান্ত হন। চোখে তীব্র জ্বালা, শ্বাসকষ্ট ও সাময়িক দৃষ্টিহীনতায় কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে থাকাও সম্ভব হয়নি। আশপাশে থাকা কয়েকজন সাংবাদিক দ্রুত এগিয়ে এসে গ্যাস লাইট ও পানি দিয়ে তাকে সহায়তা করেন।

প্রায় ১৫–২০ মিনিট পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হলে তিনি আবারও লাইভ সম্প্রচারে ফিরে যান এবং পেশাগত দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখেন।

এ ঘটনার বিষয়ে তন্ময় উদ্দৌলা বলেন, “আমাদের ওপর কোনো হামলা হয়নি; দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই টিয়ারশেলের ধোঁয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলাম। সাংবাদিকতার মূল চ্যালেঞ্জ হল পরিস্থিতি যাই হোক, সত্য তথ্য তুলে ধরা। এ ধরনের সংবাদ সংগ্রহে ঝুঁকি থাকবেই তার মাঝেও চেষ্টা করেছি জনগণের কাছে সঠিক খবর পৌঁছাতে।”

দিনভর সংঘর্ষ, টানটান উত্তেজনা ও ধাওয়া–পাল্টাধাওয়ার পর রাত ১০টার পর থেকে ধানমন্ডি ৩২ এলাকার পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পুরো এলাকা পুনরায় নিশ্চিত নিরাপত্তার আওতায় নেয়।

(টিইউ/এএস/নভেম্বর ১৯, ২০২৫)