মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি : মাগুরার মহম্মদপুরে শীত মৌসুমে বাজারে যেসব ফল আসে তার মধ্যে সবচেয়ে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল হলো আমলকি।  ছোট এই সবুজ ফলটিকে কেউ বলেন ‘স্বর্ণফল’ কেউ বলেন ‘প্রাকৃতিক ওষুধ’। 

ভিটামিন সি-এর বিশাল ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত আমলকি শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় না,বরং শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াকেও সক্রিয় রাখে।

এ কারণে লোকমুখে আমলকি সম্পর্কে একটি কথা প্রচলিত-“হিট কোন আগুন ধরে না” অর্থাৎ শরীরে অতিরিক্ত গরম, জ্বালা-পোড়া বা হিটজনিত সমস্যা কমাতে এই ফলটির জুড়ি নেই।

দক্ষিণ এশিয়ার আদি এই ফলটি প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ,ইউনানি এবং লোকজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

চিকিৎসকদের মতে প্রতিদিন একটি আমলকি খাওয়া মানে শরীরকে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিকের শক্তি দেওয়া।এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,পলিফেনল,ফাইবার ও খনিজ, যা মানবদেহের বিপাকক্রিয়া উন্নত করে।

পুষ্টিবিদদের মতে,আমলকি শরীরে ফ্রি-রেডিক্যাল কমিয়ে কোষের ক্ষয় রোধ করে। এর ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি,চুল পড়া কমে যাওয়া এবং বার্ধক্য ধীর হওয়ার মতো ইতিবাচক প্রভাব দেখা যায়।

একই সঙ্গে এটি রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে, হার্টকে সক্ষম করে এবং লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এমনকি ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও আমলকি কার্যকর ভূমিকা রাখে।

হজমশক্তি বৃদ্ধিতে আমলকির অবদান আলাদা করে উল্লেখযোগ্য। নিয়মিত আমলকি খেলে গ্যাস্ট্রিক, অম্লতা ও জ্বালাপোড়া কমে যায়। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং পেটকে স্বস্তি দেয়। তাই গ্রামাঞ্চলে অনেকেই আমলকিকে দেহ ঠাণ্ডা রাখা ও রক্ত পরিশোধনের সহজ উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন।

চুল-ত্বকের সৌন্দর্যেও আমলকির ব্যবহার বহুল প্রচলিত। আমলকি গুঁড়া বা তেল চুলে ব্যবহার করলে চুল কালো,নরম ও মজবুত হয়। ত্বকে এর প্যাক ব্যবহার করলে ত্বক হয় উজ্জ্বল ও সতেজ।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সহজলভ্য এই ফলটি নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে নানা দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি কমে যায়। শিশু থেকে বয়স্ক-সব বয়সী মানুষের জন্য এটি নিরাপদ ও উপকারী। কম খরচে এত গুণের সমাহার-এ যেন প্রকৃতির উপহার।

প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে সুস্থ থাকতে আমলকির মতো প্রাকৃতিক খাবার ফেরাতে পারে প্রাণশক্তি, বাড়াতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।

(বিএসআর/এএস/নভেম্বর ২২, ২০২৫)