ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক : নিউ ইয়র্ক পুলিশে কর্মরত এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সার্জেন্ট অনলাইনে পরিচিত এক নারীর সাথে প্রতিশোধ নেওয়ার উদ্দেশ্যে নিজেকে আইসিই এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন কারণ ওই নারী তার প্রণয় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কেন তিনি নিজেকে আইসিই এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন আদালত শেষে এই প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি ২৯ বছর বয়সী  ওই পুলিশ কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সূত্রে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ সার্জেন্ট আতিকুল ইসলাম, যিনি তার বাবা ও ভাইয়ের সাথে বাড়িতেই থাকেন, অনলাইনে ওই নারীর সাথে পরিচিত হন এবং তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। কিন্তু নারীটি তা প্রত্যাখ্যান করলে, তিনি কর্তব্যরত না থাকা অবস্থায় গত মার্চে ওই নারীর কুইন্সের বাড়িতে আইসিই পাঠানোর হুমকি দেন এবং নিজেকে ফেডারেল ইমিগ্রেশন সংস্থার একজন ‘ফিল্ড ডিরেক্টর’ বলে দাবি করেন ফেডারেল নথি ও সূত্রের বরাতে জানা গেছে।

আতিকুল ইসলাম নামের এই ব্যক্তি 'জেমস ডব্লিউ. অ্যান্ডারসন' নামেও পরিচিত, তার শিকার নারীটিকে সতর্ক করেছিলেন যে তিনি এবং তার পরিবারকে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে নিউ ইয়র্ক সিটির আইসিই অফিসে রিপোর্ট করতে হবে এমনটাই অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই নারী ও তার পরিবারের অভিবাসন অবস্থা স্পষ্ট নয়।

নিউ ইয়র্ক পুলিশের ইন্টারনাল অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো হয়রানির একটি অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করলে জানা যায় যে ইসলাম ঘটনাটির সময় নিজেকে আইসিই এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। এরপর নিউ ইয়র্ক পুলিশ দ্রুত বিষয়টি ফেডারেল কর্তৃপক্ষকে জানায়।

ব্রুকলিনের সার্ভিস এরিয়া ৩–এ কর্মরত আতিকুল ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা পরিচয় ভুয়া ধারণের এক অভিযোগে অভিযুক্ত হন এবং মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং ব্রুকলিন ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক টারিন মার্কলের মাধ্যমে ২৫ হাজার ডলারের ব্যক্তিগত বন্ডে মুক্তি পান।

সহকারী মার্কিন অ্যাটর্নি রেবেকা শুমান আদালতে আতিকুল ইসলাম-এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু না বললেও, বিচারকের কাছে অনুরোধ করেন যেন আতিকুল ইসলামকে ওই নারীর বাড়ির কাছাকাছি না আসার নির্দেশ দেওয়া হয় কারণ ‘তিনি জানেন ভুক্তভোগী কোথায় থাকেন।’ বিচারক আতিকুল ইসলামকে ভুক্তভোগীর সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ না রাখতে নির্দেশ দেন।

আতিকুল ইসলামের আইনজীবী জন আরলিয়া আদালতে জানান যে, নিউ ইয়র্ক পুলিশ তাকে বেতনসহ সাময়িক বরখাস্ত করেছে এবং তার ব্যাজ ও সার্ভিস অস্ত্র জব্দ করেছে। আইনজীবী, যিনি তাকে আদালতে 'সার্জেন্ট ইসলাম' হিসেবে পরিচয় করিয়েছেন, বলেন তার মক্কেল 'এ অভিযোগগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার ব্যাপারে সম্পূর্ণ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।'

আদালত শেষে কেন তিনি নিজেকে আইসিই এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন সে প্রশ্নের জবাব দেননি আতিকুল ইসলাম। তিনি দোষী সাব্যস্ত হলে, তার সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে আইন বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।

(আইএ/এসপি/নভেম্বর ২৪, ২০২৫)