একমাস পরেই বাজারে আসবে মুড়িকাটা পেঁয়াজ, দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা
একে আজাদ, রাজবাড়ী : শেষ সময়ে মুড়িকাটা পেঁয়াজ পরিচর্যায় ব্যস্ত রাজবাড়ীর চাষিরা। আগামী তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে বাজারে আসবে এসব পেঁয়াজ। তবে ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে এখনই দুশ্চিন্তায় চাষিরা। কৃষি বিভাগের দাবি আগাম পেঁয়াজে লাভবান হবে কৃষক, কমবে বাজার অস্থিরতা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার পাশ দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা ও গড়াই নদীর চরাঞ্চল সহ উচু জমিতে আবাদ করা মুড়িকাটা পেয়াজ পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষিরা। গাছের পুষ্টি বৃদ্ধি করতে শেষ বারের মতো চাষিরা সার দিচ্ছে, কেউ আবার কীটনাশক ছিটাচ্ছে, অনেকেই শেষ বারের মতো পেয়াজ গাছের মাটি আলগা করছে ভালো ফলনের আশায়।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে রাজবাড়ী জেলায় চলতি মৌসুমে ৫ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেয়াজের আবাদ হয়েছে, লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। তবে বাস্তবে আবাদ এর থেকেও অনেক বেশি।
চাষিদের দাবী মুড়িকাটা পেঁয়াজ বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায় না। ওঠার পরপরই দ্রুত বিক্রি করে দিতে হয়। তাই সেই সময় বাজারদর গুরুত্বপূর্ণ কৃষকদের কাছে। বর্তমানে শ্রমিক, সার, গুঁটি পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ভালো দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে না পারলে লোকসান হবে। আগামী ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকেই উঠতে শুরু করবে এসব পেঁয়াজ।
কালুখালী উপজেলার হরিণ বাড়িয়া চরের কৃষক মো. লিটন জানান, চলতি মৌসুমে তিন বিঘা জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ করেছেন তিনি। সবমিলিয়ে তিন বিঘা জমিতে এক লাখ টাকার বেশি খরচ হবে। ফলন ভালো হলে প্রায় ১৫০ মণ পেঁয়াজ পাবেন বলে আশা করছেন তিনি।
বালিয়াকান্দি নারুয়া গড়াই নদীর চরের কৃষক ফারুক বলেন, এক বিঘা জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ করেছে। সবমিলিয়ে ৬০ হাজার টাকা খরচ হবে। ভালো ফলন হলে ৫০-৬০ মণ পেঁয়াজ হবে। বাজার দর প্রতি মণ ২৫শ থেকে ৩ হাজার হলে লাভ থাকবে। নাহলে লোকসান হবে।
পাংশার হাবাসপুর চরের কৃষক আলীম শেখ বলেন, লিজ নিয়ে ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ রোপণ শেষে এখন পানি দিচ্ছেন। তবে শ্রমিক, সার আর সেচের জন্য ভালোই খরচ হবে। তবে, ফলন ও দাম ভালো পেলে লাভবান হতে পারবেন।
বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার ঘোষ বলেন, আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ আর ২০ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে বাজারে আসবে। চরাঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে উপযোগী হওয়ায় এবছর ভালো ফলন হবে। এতে করে কৃষক লাভবান হবে অন্যদিকে বাজারের অস্থিরতাও কমবে।
(একে/এসপি/নভেম্বর ২৫, ২০২৫)
