সাংবাদিকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ শিক্ষকের
সোনাতলা পাইলট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনুপস্থিত থেকেও খাতায় উপস্থিত
বিকাশ স্বর্ণকার, বগুড়া : বগুড়ার সোনাতলা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ স ম মোনারুল ইসলাম শাহীন দির্ঘদিন প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থেকেও হাজিরা খাতায় তিনি নিয়মিত এমন অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টির সত্যতা খুঁজতে প্রতিষ্ঠানে গেলে হাজিরা খাতা তো দেখানো হয়নি উল্টো সাংবাদিক এর সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়।
একটি সূত্র জানায়, গত ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায়ের পর থেকেই তিনি নানা ভাবে ছুটি নিয়ে বিদ্যালয়ে আসতেন না। তবে ছুটির সমস্ত কলাকৌশল শেষ এখন চাকুরীর নিয়মানুযায়ী প্রতিষ্ঠানে তাকে থাকতে হবে নিয়মিত জানিয়েছেন অফিস। তিনি সকল নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানে না এসেও কৌশলে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলেছেন। শুধু তাই নয় রিতিমত বেতন সহ সব ধরনের সুবিধা ভোগ করছেন এই শিক্ষক। এতে করে দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ।
ওই প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, প্রধান শিক্ষক প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত না থাকায় বেশকিছু বিষয়ে চরম সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তারা এটিও জানায়, এখন কে যে প্রধান তা আমরা বুঝতেও পারছি না।
সরেজমিনে বেশ কয়েকদিন ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের দেখা মেলেনি। তবে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারের সাথেই লাগানো আরেকটি চেয়ারে একজন শিক্ষক বসে থাকতে দেখে এগিয়ে গিয়ে তাকে প্রধান শিক্ষক এর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতেই, তিনি রাগান্বিত হয়ে বলেন আপনারা কেন আসেন এই প্রতিষ্ঠানে? তিনি উচ্চস্বরে বলেন, এই প্রতিষ্ঠান কিভাবে চলবে এটি আমরা দেখবো। আপনাদের লেখায় কিছুই যায় আসেনা। যদিও তার উত্তেজিত মূহুর্তে অনেক শিক্ষকই এগিয়ে এলেও তটস্থ অবস্থায় থাকতে দেখা গেছে। এর পরের দিন ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে জানাগেছে প্রধান শিক্ষক আসেননি। তবে এটিও জানা যায় হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরে নাকি তিনি নিয়মিত।
শিক্ষাবিদদের মতে কোন প্রতিষ্ঠানের প্রধান না থাকলে সেই প্রতিষ্ঠান দূর্বল হয়ে পড়ে সেই সাথে বেশ কিছু কার্যক্রমে দেখা দেয় স্থবিরতা। উপজেলার মধ্যে এমন সুনামধন্য প্রতিষ্ঠানে গত এক বছরের অধিক সময় ধরে প্রধান শিক্ষক ঠিকমতো বিদ্যালয়ে আসেন না। এরফলে স্কুল টিতে শিক্ষা ব্যবস্থার উপরে প্রভাব পড়তে পারে এবং নিয়মনীতিতে দেখা দিতে পারে বিশৃঙ্খলা। যদি প্রধান শিক্ষক নিয়মিত না আসে তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধরে রাখতে বিকল্প পথ বেছে নেয়ার দাবি জানালেন উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আসম মোনারুল ইসলাম শাহীন এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনটি রিসিভ করে কথা বলেননি।
প্রধান শিক্ষক এর অনুপস্থিত স্বীকার করে ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ নাজমুল ইসলাম জানান, প্রধান শিক্ষক নিয়মিত না এসেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছেন এটি আমি অবগত। আমি নিজে ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তার দেখা পাইনি। তবে আমি তাকে বলেছি হয় আপনি অবসরে যান অথবা অবৈতনিক চাকুরী করেন।
তিনি আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক যদি অনুপস্থিত থেকেই যায় তাহলে সহকারী প্রধান শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দ্বায়িত্ব পালন করতে হবে। তবে সহকারী প্রধান যদি ভারপ্রাপ্তের দ্বায়িত্ব বুঝে নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন তাহলে বিধি মোতাবেক তাকেও চাকরি ছাড়তে হবে।
(বিএস/এসপি/নভেম্বর ২৬, ২০২৫)
