কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি : কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের সামনে অবস্থিত সরকারি নোয়াদিয়া বিল। ইজারা নিয়েও প্রভাবশালীদের হুমকির মুখে দু’বছর ধরে মাছ ধরতে পারছেনা মৎস্যজীবীরা। ফলে বিল ইজারা নিয়ে পরছেন তারা বিপাকে।

জানা যায়, বলাইশিমুল ইউনিয়নের সরাপাড়া গ্রামের সরাপাড়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাধক মৃত: মুসলিম উদ্দিনের ছেলে সেকুল মিয়া গত ২০২৩ সালের ১৪ এপ্রিল ৩ বছরের জন্য নেত্রকোণা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বিল ইজারা নেন। এক বছরের বিলের ইজারা মূল্য ৭৫ হাজার টাকা। সেকুল মিয়া, অভিযোগ করে বলেন, আমরা প্রকৃত জেলে কিন্তু কামারগাঁও গ্রামের প্রভাবশালীদের হুমকির মুখে আমরা বিলে মাছ ধরতে পারছিনা। এতে আর্থিক ভাবে অনেক ক্ষতির সন্মুখীন হয়েছি।

একই গ্রামের আব্দুল জলিল জানান, চলতি বছরের ১৪ ফ্রেরুয়ারি বিকাল ৫টার দিকে কামারগাঁও গ্রামের পলাশ মিয়া, জাহাঙ্গীর, জিয়া রহমান, দিলকুল, শাহ আলম, সহ ১৬-১৭ জনের একটি দল দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে বিলে যায়। এ সময় তারা উৎত্তেজনা সৃষ্টি করে প্রায় ৮ লাখ টাকা মূল্যের মাছ ধরে নিয়ে যায়। বিল থেকে মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ার ফলে মৎস্যজীবীরা আর্থিক ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

আব্দুল জলিল আরও জানান, মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ায় এক বছরের কিস্তির টাকা জমা দিতে পারছিনা। এ ঘটনার বিচার দাবি করে আব্দুল জলিল বাদী হয়ে নেত্রকোণা আদালতে কামারগাঁও গ্রামের ইছব আলীসহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এদিকে কামারগাঁও গ্রামে মৃত বাদশা মিয়ার চেয়ে ইছব আলী বাদী হয়ে সরাপাড়া একতা মৎসজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে গত ৫ই এপ্রিল নেত্রকোনা আদালতে আরেকটি পাল্টা মামলা দায়ের করেন। সরকারি বিল ইজারা নেওয়ার পরও বিলে মাছ ধরতে না পারার ঘটনা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। আব্দুল জলিল বলেন-আমরা সরকারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ইজারার টাকা পরিশোধ করে বিল ইজারা নিয়েছি। কিন্তু আমাদের চাষ করা বিলের আট লক্ষ টাকার মাছ তারা জোরামলে ধরে নিয়ে গেছে। এতে আমরা আর্থিক ভাবে চরম ক্ষতির শিকার হয়েছি।

কামারগাঁও গ্রামের ইছব আলী ও জিয়া রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, বিলে মাছ ধরতে তাদেরকে আমরা কোনো বাঁধা নিষেধ দেইনি। আমরা বলেছি বিলের মাছ ধরতে কোনো বাঁধা নেই। তবে আমাদের জমির উপর দিয়ে বিলে মাছ ধরতে গেলে আমাদের জমি নষ্ট হয়। মামলা করেছেন কেন? ইছব আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারাও তো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলার জন্যই পাল্টা মামলা করছে। উপজেলা ভূমি অফিস সূত্র জানায়, আমরা সরকারি বিল ইজারা দিয়ে মৎস্যজীবীদের বিল বুঝিয়ে দিয়েছি। তাদের অভিযোগ সত্য হলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

(এসবিএস/এএস/নভেম্বর ২৭, ২০২৫)