‘প্রাণিসম্পদের উৎপাদন কার্যকরভাবে চলমান থাকা নিশ্চিত করতে হবে’
স্টাফ রিপোর্টার : দেশের মোট জাতীয় উৎপাদনে (জিডিপি) প্রাণিসম্পদের অবদান ২ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির হার ৩.১৯ শতাংশ ও কৃষিজ উৎপাদন খাতে তার অবদান সাড়ে ৬ শতাংশ। শুধু পোল্ট্রি খাতেই প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৬০ লাখ মানুষ জড়িত। তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশই নারী। প্রাণিসম্পদের এই উৎপাদন কার্যকরভাবে চলমান থাকা নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র,জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এক শুভেচ্ছা বার্তায় (ভিডিও) তিনি এ কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়টির সচিব আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে ২৬ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রথমবারের মতো ‘দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি: প্রাণিসম্পদে হবে উন্নতি’ প্রতিপাদ্যে ‘জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ, ২০২৫’ উদযাপন হচ্ছে। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বল্প পুঁজির কর্মসংস্থান সৃষ্টি, নারীর ক্ষমতায়ন, বাণিজ্যিক খামার ও সহায়ক শিল্প গড়া, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনসহ সুস্থ, সবল ও মেধাবী জাতি গঠনে প্রাণিজ আমিষ যোগানে গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে প্রাণিসম্পদ খাত এখন প্রতিষ্ঠিত।
তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্ন উৎপাদনমুখী প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের ফলে দেশে ডিম, দুধ ও মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে, যা নাগরিকদের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ করছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, প্রাণিজাত খাদ্যের অপ্রতুলতা, অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স, প্রাণিজ উপজাত ব্যবহার, মানুষ ও প্রাণীর মধ্যে পরস্পর সংক্রমণযোগ্য রোগ দমন, ইমারজিং ও রিইমারজিং রোগ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বর্তমান সময়ে প্রাণিসম্পদ খাতের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তবর্তীকালীন সরকার এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
সপ্তাহব্যাপী এই উদ্যোগ সরকারের প্রচেষ্টাকে আরও বেগবান করবে। পাশাপাশি, গবাদিপশু পালনে নতুন নতুন প্রযুক্তি প্রান্তিক খামারিদের মাঝে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করবে, যা দেশের সর্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রাণিসম্পদের উৎপাদন, বিপণন ও প্রক্রিয়াজতকরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেসব মানুষ জড়িত তারা দেশের অর্থনীতিতে নীরবে অবদান রেখে চলেছে। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
প্রাণিসম্পদের স্বাস্থ্য উন্নয়নে বড় ধরনের বাধা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য আমরা জোরদার কর্মসূচি নিচ্ছি। নিয়মিত মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার কাজ করা হচ্ছে।
কোরবানির কোনো পশু আমদানি করতে হয়নি উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব। প্রান্তিক খামারিদের পশুপালনের কারণে আমাদের কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণ হওয়ার কারণে বাহির থেকে আমদানি করতে হয়নি।
(ওএস/এএস/নভেম্বর ২৭, ২০২৫)
