স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের অবস্থা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের চেয়ে খারাপ বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের হার ৩৬ শতাংশ। খেলাপি ঋণের এ হার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের তিনগুণ।

বৃহস্পতিবার ( ২৭ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার-আইসিসিবিতে চার দিনব্যাপী সিরামিক এক্সপো উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্ততায় তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, গত সরকার অর্থনীতি শেষ করে দিয়ে গেছে। বর্তমান অন্তর্বতী সরকার স্থিতিশীলতা আনতে কাজ করছে। এর ফলে ব্যবসা বাণিজ্য ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উন্নতি হয়েছে। চার দিনব্যাপী সিরামিক এক্সপো তারই দৃষ্টান্ত। সিরামিক শিল্পকে এগিয়ে যেতে যা করার জন্য, এ সরকার তাই করবে।

এ মেলার মধ্য দিয়ে সিরামিক শিল্পের আন্তর্জাতিক পরিসরে তুলে ধরে সুযোগ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে যেসব সমস্যা আছে, সেগুলো তুলে ধরার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান হবে। দেশে চাহিদা পূরণ করে রপ্তানির বাজার সম্প্রসারিত হবে বলে মনে করেন এ খাতের উদ্যোক্তা নেতারা।

সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন-বিসিএমইএ এর প্রেসিডেন্ট মইনুল বলেন, তৈরি পোশাকের পর দ্বিতীয় বিকল্প রপ্তানি পণ্যের অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তৈরি পোশাকের মতো সিরামিক শিল্পেও নীতি সহায়তা দিলে এ শিল্প বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও কর্মসংস্থান বড় নির্ভরতা হতে পারে। এক সময়ের ৮০ ভাগ রপ্তানি নির্ভর সিরামিক শিল্প এখন ৮০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হচ্ছে। বাকি ২০ শতাংশ আমদানি করা হচ্ছে। পাশাপাশি সিরামিক পণ্য রপ্তানি করে বছরে ৫০০ কোটি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে।

সিরামিককে বিলাসী পণ্য হিসেবে সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি (এসডি) ধার্য আছে। অতিরিক্ত এ কর প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এর জন্য রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয় বাজারেও দাম বাড়ছে।

বিসিএমইএ'র প্রেসিডেন্ট দেশের সিরামিক শিল্পের চিত্র তুলে বলেন, দেশে এরই মধ্যে সিরামিক টেবিলওয়্যার, টাইলস্ ও স্যানিটারিওয়্যার এর ৭০টিরও অধিক শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় বাজারে বিক্রির পরিমাণ বার্ষিক প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। গত দশ বছরে সিরামিক খাতে উৎপাদন ও বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ১৫০ শতাংশ। বিশ্বের প্রায় ৫০টিরও অধিক দেশে সিরামিক পণ্য রপ্তানি করে বছরে আয় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। এ খাতে রপ্তানি আয় বাড়ছে। বাড়ছে বিনিয়োগও। এ শিল্পে বড় উৎপাদনকারী দেশ চীন ও ভারতসহ অনেক দেশ বিনেয়োগে আগ্রহী। এ শিল্পে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকার অধিক বিনিয়োগ রয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে।

বিসিএমইএ'র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মামুনুর রশীদ বলেন, দেশের মোট চাহিদার ৮০ ভাগ দেশের সিরামিক কারখানাগুলো পূরণ করছে। পাশাপাশি রপ্তানি করা হচ্ছে। কিন্তু চাহিদা মতো গ্যাসের সরবারহ না থাকার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এ শিল্পের সমস্যাগুলো সমাধান করে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা দেওয়া হলে আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হতো।

(ওএস/এএস/নভেম্বর ২৮, ২০২৫)