রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : চার দফা দাবিতে শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতির কারণে সাতক্ষীরার চারটি সরকারি স্কুলে দ্বিতীয় দিনেও বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ ছিল। ফলে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। এনিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। এদিকে পরীক্ষার পক্ষে-বিপক্ষে মতানৈক্যের ফলে সৃষ্ট সংঘর্ষের ফুটেজ নেওয়ায় সাংবাদিকদের দিতে তেড়ে আসে সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থী।

শিক্ষকরা বলছেন, চার দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। কর্মবিরতি প্রত্যাহারের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি এবং দাবি পূরণ না হলে তারা চলমান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার দাবি শিক্ষকদের।

সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফরোজা আক্তারের পিতা আমিনূর রহমান জানান, ‘‘শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে কিন্তু পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলন করা মোটেও ঠিক হচ্ছে না। এতে শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ও মানসিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হচ্ছে। অনিশ্চয়তার মূখে পড়ছে তাদের ভবিষ্যত। ‘’

সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম টুকু জানান, ‘‘একজন শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকদের দাবির সাথে একমত। কিন্তু পরীক্ষা বন্ধ করে এধরনের আন্দোলন করা মোটেও ঠিক হচ্ছে না।’’

এদিকে, মঙ্গলবার বেলা এগারটার দিকে সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষার পক্ষে-বিপক্ষে শিক্ষার্থীদের দুটি দল তৈরি হয়। বাকবিতন্ডার একপরযায়ে তারা হাতাহাতি ও মারামারিতে লিপ্ত হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়।মারামারির ফুটেজ ফটো সাংবাদিকরা ধারণ করলে শিক্ষার্থীদের কয়েকজন তেড়ে আসে। এমনকি তারা ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজ সাংবাদিকদের মুছে দিতে বাধ্য করে। এতেই তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি। পরবর্তীতে শহরের মিনি মার্কেটে অবস্থিত সাংবাদিকদের অফিসে তারা সাংবাদিকদের ওপরে চড়াও হয় ও আস্ফালন করতে থাকে। এমনকি সাংবাদিকদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করতে দেখা যায় তাদের।

এবিষয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাসেম বলেন, ‘‘মাধ্যমিক পরযায়ের কোমলমতি কিশোর শিক্ষার্থীরা তুচ্ছ বিষয়ে এমন ভয়ানক আচরণ করতে পারে, সেটা ভাবতেও লজ্জা লাগে।’’

শিক্ষার্থীদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করতে জাতি গড়ার কারিগর শিক্ষকদের কাছে অনুরোধ করেন তিনি।

(আরকে/এসপি/ডিসেম্বর ০২, ২০২৫)