ফরিদপুরে ভেজাল গুড়ের কারখানায় অভিযান, সিলগালা
রিয়াজুল রিয়াজ, বিশেষ প্রতিনিধি : ফরিদপুরে একটি ভেজাল গুড়ের কারখানায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এতে নানা অনিয়ম, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অনিরাপদ ভেজাল খাদ্য উৎপাদন সহ বেশকিছু অভিযোগে অভিযুক্ত কারখানাটিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে ফরিদপুর সদরের শিবরামপুরে এ যৌথ অভিযানটি পরিচালিত হয়। ফরিদপুর জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো. আজমুল ফুয়াদ 'দৈনিক বাংলা ৭১'কে এ অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মো. আজমুল ফুয়াদ জানান, মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) এর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসন এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে ফরিদপুর সদর উপজেলার শিবরামপুরস্থ ছোট বটতলা এলাকায় জনৈক স্বপন কুমার শীল এর মালিকানাধীন ভেজাল গুড় তৈরির ফ্যাক্টরীতে নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ অনুযায়ী একটি সমন্বিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
স্বপন কুমার শীল ফরিদপুর সদরের শিবরামপুর এলাকার প্রিয়নাথ শীল এর ছেলে বলে জানা গেছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন মো. আতিকুর রহমান, সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, ফরিদপুর। অভিযানে মো. আজমুল ফুয়াদ, নিরাপদ খাদ্য অফিসার, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, ফরিদপুর সার্বিক বিষয়ে সমন্বয় করেন। এছাড়া উক্ত অভিযানে উপস্থিত ছিলেন সহকারী পরিচালক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ফরিদপুর, জেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক এবং বাংলাদেশ আনসারের একটি চৌকস দল।
উক্ত কারখানায় অত্যন্ত নোংরা, স্যাঁতস্যাঁতে, অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন উপায়ে, নির্ধারিত স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ সংরক্ষণ না করেই ভারত থেকে আমদানিকৃত নিম্নমানের টিনজাত চিটাগুড় (যা গো-খাদ্যে ব্যবহৃত হয়) এর সাথে নিষিদ্ধ হাইড্রোজ, ফিটকিরি, ননফুড গ্রেড ক্ষতিকর রঙ ও ফ্লেভার,পঁচা মিষ্টি, মিষ্টির নষ্ট গাদ, ময়দা, সোডা, চিনি সহ ব্যবহার করে খেজুর ও আখের গুড় তৈরী করা হয়। এছাড়াও কারখানায় বিভিন্ন ধরনের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্যামিকেল ( D–9700 : রেজিন/সলভেন্ট/আঠা জাতীয়, এবং Polyurethane : জুতার সোল তৈরির ক্যামিকেল) পাওয়া যায়।
উক্ত কারখানায় পাওয়া নথিপত্র ও রেজিস্ট্রার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কারখানাটি প্রধানত রাতের অন্ধকারে ভেজাল গুড় উৎপাদন করে বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলসহ ঢাকা ও রাজশাহীর বাজারে সরবরাহ করে থাকে। অভিযানের সময় কারখানায় মালিক পক্ষের কেউ উপস্থিত না থাকায় আনুমানিক সাড়ে ৬ হাজার কেজি ভেজাল গুড় এবং শিল্পে ব্যবহার্য ক্যামিকেল জব্দ করে তা জনসম্মুখে ধ্বংস করা হয়।
এছাড়া কারখানাটি সিলগালা করার পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে মামলা দায়েরের কার্যক্রম চলমান রয়েছে জানিয়েছে ফরিদপুরের নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো. আজমুল ফুয়াদ।
(আরআর/এএস/ডিসেম্বর ০৩, ২০২৫)
