ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : ঈশ্বরদীতে আট কুকুরছানা হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গৃহবধূ নিশি রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় তার দুই বছরের দুগ্ধপোষ্য সন্তান আনাস খন্দকারকেও সঙ্গে রাখা হয়। বুধবার দুপুরে থানা থেকে তাকে আদালতে নেওয়া হলে শিশুটিকেও মায়ের কোলে দেখা যায়। পরে আদালতের নির্দেশে নিশি রহমানকে কারাগারে পাঠানো হলে তার সঙ্গে কারাগারে যায় ছোট শিশুটিও।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ নিশি রহমানকে পাবনা আমলী আদালত-২ এ হাজির করে। বিচারক তরিকুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। শিশুটিকে দেখাশোনার মতো কেউ না থাকায় আদালতের নির্দেশে তাকেও মায়ের সঙ্গে জেলহাজতে রাখা হয়েছে।

নিশি রহমানের স্বামী, ঈশ্বরদী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন বলেন, “স্ত্রীর জন্য আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করেছি, কিন্তু শুনানি হয়নি। বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। আগামী রোববার (৬ ডিসেম্বর) শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, তাদের তিন সন্তান—দুই ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে, বড় ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে। পরীক্ষার সময় হওয়ায় সন্তানদের দেখার মতো কেউ নেই।
“একটা অন্যায় হয়ে গেছে। এর জন্য আমাদের পুরো পরিবারই যন্ত্রণায় ভুগছে,”—যোগ করেন তিনি।

পাবনা জেলা কারাগারের জেল সুপার ওমর ফারুক বলেন, “শিশুটি দুগ্ধপোষ্য হওয়ায় মায়ের সঙ্গে কারাগারেই রাখা হচ্ছে।”

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের আঙিনায় ‘টম’ নামে একটি কুকুরের বসবাস। এক সপ্তাহ আগে কুকুরটি ৮টি বাচ্চা জন্ম দেয়। সোমবার সকাল থেকে বাচ্চাগুলোকে খুঁজে না পেয়ে মা কুকুরকে বিভিন্ন স্থানে ছুটোছুটি করতে দেখা যায়।

পরে উপজেলা পরিষদের কর্মচারীরা জানতে পারেন, ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী নিশি রহমান গত রবিবার রাতে বস্তাবন্দি অবস্থায় কুকুরছানাগুলোকে উপজেলা পরিষদের পুকুরে ফেলে দেন। পরদিন সকালে পুকুর থেকে ছানাগুলোর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বাদী হয়ে নিশি রহমানকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেন। পরে রাতেই পুলিশ ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

(এসকেকে/এএস/ডিসেম্বর ০৪, ২০২৫)