সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আধিপত্যকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৩০ জন আহত হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া গ্রামের শেখ বাড়ি ও মোল্লা বাড়ির মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ভৈরব থানা অফিসার আতাউর রহমান আকদ।

সংঘর্ষে আহত তামজিদ মোল্লা (১৬), রাজু মোল্লা (২২), বাবু মিয়া (২৫), বশির মিয়া (৫৫), ফয়সাল মোল্লা (৩৭), সাইফুল (২২), শফিকুল ইসলাম (১৬), হযরত আলী (৪০), আব্দুর রহমান (১৬), ফখর উদ্দিন (১৬), শোয়েব (৩৬) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ফখর উদ্দিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ৮ নভেম্বর বিকালে আধিপত্যকে কেন্দ্র করে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া গ্রামের মোল্লা বাড়ি ও শেখ বাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মোল্লা বাড়ির নেতৃত্ব দেন ইউপি সদস্য হারুন মিয়া ও মুর্শিদ মিয়া। অপর দিকে শেখ বাড়ির নেতৃত্ব দেন মাইন উদ্দিন মিয়া ও দিলু মিয়া। এর আগে ৭ ডিসেম্বর আগানগর টুকচাঁনপুরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহতদের সহযোগিতা দেয়ার বিষয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের চলাফেরাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ওই দিন সংঘর্ষে মোল্লা বাড়ির নিজাম (৪২) ও তাঁর ছেলে তামিম (২২) আহত হয়। পরদিন ৮ ডিসেম্বর সকাল থেকে লুন্দিয়া গ্রামে দুই পক্ষের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিকালে উভয় পক্ষ দা, বল্লম, লাঠি ও ইট পাটকেলসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে মোল্লা বাড়ির সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের ইউনিয়নের টুকচাঁনপুর গ্রামে গ্যাস সিলিন্ডারে বিস্ফোরণে গুরুতর আহদের দেখতে ৭ ডিসেম্বর ওই এলাকায় গিয়েছিলাম আমরা। সেখানে যেতে মোটর সাইকেল ভাড়া করে যেতে হয়। মোটরসাইকেল চালকরা ছিল আওয়ামী লীগ সমর্থক। কেন আওয়ামী লীগ সমর্থক চালকদের নিয়ে টুকচাঁনপুর গিয়েছে এ বিষয়ে আমাদের মোল্লা বাড়ির বিএনপির সাথে শেখ বাড়ির বিএনপির নেতাদের বাকবিতণ্ডায় জেরে মারামারি হয়। আজ আবার একই ঘটনার জেরে বাগবিতণ্ডার এক ফাঁকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আমিসহ সংঘর্ষে আমাদের মোল্লা বাড়ির ১৫ জন আহত হয়েছে।

এ বিষয়ে শেখ বাড়ির গোলাপ মিয়া বলেন, মোল্লা বাড়ির বিএনপির নেতারা আওয়ামী লীগের নেতার সাথে আঁতাত করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারিত শুরু করেছে। আমরা তাদের এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে গেলে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে বিষয়টি সংঘর্ষে রুপ নেয়। এতে আমাদের ১৫ জন আহত হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক উম্মে হাবীবা জুঁই বলেন, ৮ ডিসেম্বর বিকাল পাঁচটা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১১ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। তাদের মধ্যে ১ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান আকন্দ বলেন, ৮ ডিসেম্বর বিকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ দুইটি টিম পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। উভয় পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৯, ২০২৫)