দিলীপ চন্দ, ফরিদপুর : ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের ভূমি অফিসের তহশিলদার ফজলু মোল্লার ঘুষ বাণিজ্যে অতিষ্ঠ ভুক্তভোগীরা। ইচ্ছেমতো সময় নিয়ে ও অতিরিক্ত টাকা ছাড়া তিনি কোনো কাজই করেন না বলে অভিযোগ করেছেন সেবা গ্রহীতারা।

এ বিষয়ে সদর উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগপত্র দিয়েও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভূমি কর্মকর্তা বলেন, ফরিদপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা ফজলু মোল্লা। ফরিদপুর সদর উপজেলার গোয়ালচামটে রয়েছে তার ডুপ্লেক্স আলিশান বাড়ি, এ ছাড়াও মিয়া পারা সড়কে আত্মীয়দের নামে করেছেন ৫ তলা বাড়ি রয়েছে আলিশান মোটরসাইকেল, চলাফেরা রাজকীয়। তিনি ম্যানেজ করে চলেন তাই অভিযোগ উঠলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সেবা নিতে আসা অধিকাংশ ব্যক্তি এর আগেও একাধিকবার এসেছেন। তহশিলদার ফজলু মোল্লা সেদিনও তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন। সাংবাদিক দেখে কয়েকজনের কাজ করে দিলেও তার পরিচিত অনেক সাংবাদিক আছেন এবং তার আত্মীয় বড় মিডিয়ায় কাজ করেন বলে সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, আমি লিখতে পারি, লিখাতেও পারি। টাকা ছাড়া কোনো কাজই করেন না এ ভূমি কর্মকর্তা।

স্থানীয়রা জানান, ফজলুর টার্গেট অসহায় ও দরিদ্র কৃষক। তার নিকট কেউ কাজের জন্য গেলে নানা অজুহাতে দিনের পর দিন ঘুরিয়ে বাড়িতে লোক দিয়ে কাজ করাবে বলে অতিরিক্ত টাকা নেয়। যা নেয় তার অর্ধেকেরও কম রশীদ করে। ৩০০ টাকার কমে একটি পর্চাও মেলে না। সে এখানে অনেক বছর ধরে আছে। কিছু বললেই বলে উপরে লোক আছে, কিচ্ছু হবে না।

কবির পুর থেকে আসা আবজাল (ছদ্মনাম) বলেন, গত তিন দিন থেকে এখানে ঘুরছি। এখনো কোনো কাজ হয়নি।

আরেক ভুক্তভোগী রাসেদ বলেন, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কাজের জন্য টাকা দিয়েছি। এখনো আমার কোনো কাজ হয়নি।

নাম প্রকাশ করায় অনিচ্ছুক এক কৃষক বলেন, তহশিলদারকে (ফজলু) জমি খারিজের জন্য ১০ হাজার ৫০০ টাকা দিলে সে দাখিলা কাটে ৭ হাজার ৩০০ টাকার। বাদ বাকি টাকা তার পকেটে ভরেছে।

ডুপ্লেক্স বাড়ি থাকার কথা স্বীকার করলেও ফজলু মোল্লা বলেন, আমি কোনো অনিয়ম দুর্নীতি করি না, এখন সব কাজ হয় অনলাইনে।

ফরিদপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ফজলুর বিরুদ্ধে কোন লিখত অভিযোগ আমরা পাইনি, আপনাদের কাছে তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে আপনারা নিউজ করেন তারপর জেলা প্রশাসক স্যার যদি আমাকে দায়িত্ব দেন তাহলে আমি তার বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

(ডিসি/এসপি/ডিসেম্বর ১১, ২০২৫)