সাতক্ষীরায় আব্দুল লতিফ ও তার ছেলে রাসেলের ৫দিন করে রিমান্ড আবেদন
রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : খুলনার বয়রা থেকে আটক হওয়া সাতক্ষীরা জজ আদালতের সাবেক পিপি, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাড. আব্দুল লতিফকে ২০১৯ সালের সদরের কুচপুকুরের হুমায়ুন কবীর হত্যা ও তার ছেলে আমিনুল হাসান রাসেলকে ২০১৩ সালে একই এলাকার হবিবর রহমান হবি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার সকাল ১০টায় আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। একইসাথে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিন করে আদালতে রিমান্ড আবেদন জানানো হয়েছে।
অ্যাড. আব্দুল লতিফ (৫৮) সাতক্ষীরা সদরের কামারবাসয়সা গ্রামের অধুনা শহরের রসুলপুরের মৃত মুনসৃর রহমানের ছেলে। তার ছেলে রাসেল (৩৫) কামারবায়সা গ্রামের বসবাস করে।
সাতক্ষীরা আদালত সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা সদরের কুচপুকুর গ্রামের মোক্তার আলীর ছেলে ট্রাক চালক হুমায়ুন কবীরসহ কয়েকজনকে ঘটনার ১০ দিন পূর্বে ঢাকা থেকে তুলে এনে বিভিন্ন স্থানে রেখে পুলিশ নির্যাতন করে। ধরে আনার পর পুলিশ পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম বাড়ির ভাড়াটিয়া হওয়ার কারণে তার সহযোগিতায় পিপি আব্দুল লতিফ আইনি সহায়তা দেওয়ার নাম করে ২০ লাখ টাকা চেয়ে পাঁচ লাখ টাকা আদায় করেন। ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ভোরে বাইপাস সড়কের কাশেমপুর এলাকায় পুলিশ হুমায়ুন কবীরের বুকের বাম পাশে গুলি করে হত্যা করে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই আজগার আলী বাদি হয়ে পুলিশ পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম ও আব্দুল লতিফসহ সহ ১৮ জনকে আসামী করে গত বছরের ২৫ আগষ্ট আদালতে অপহরণ, চাঁদাবাজি ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। আমলী প্রথম আদালতের বিচারক নয়ন কুমার বড়াল অভিযোগটি আমলে নিয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মামলা গ্রহণের নির্দেশ দেন । সে অনুযায়ি গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। শুক্রবার আইনজীবী কমিশনের মাধ্যমে খুলনার বহেরায় সদর সাব রেজিষ্টার অমায়িক বাবুকে নিয়ে বাড়ির অংশ বিশেষ দলিল করার একপর্যায়ে আব্দুল লতিফকে গ্রেপ্তার করা হয়।
একইভাবে সাতক্ষীরা সদরের কুচপুকুর গ্রামের আকবর আলীর ছেলে হবিবর রহমান হবিকে ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে লুটপাট ও মারপিট শেষে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরদিন ভোরে কদমতলা বাজারের সোহরাব হোসেনের পুকুর পাড়ে পুলিশ তাকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা আকবর আলী বাদি হয়ে গতবছরের ৪ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার তৎকালিন পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর ও আমিনুল হাসান রাসেলসহ ৩৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১২জনকে আসামী করে সাতক্ষীরার আমলী -১ম আদালতে অপহরণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিচারক নয়ন কুমার বড়ালের নির্দেশে ১২ সেপ্টেম্বর মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এ মামলায় শুক্রবার খুলনার বয়রা থেকে আমিনুল হাসান রাসেলকে আটক করা হয়।
বাবা ও ছেলেকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ড আবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সদর থানার উপপরিদর্শক আল আমিন ও উপপরিদর্শক আব্দুল্লাহ হীল আরিফ নিশাত। বিচারক তনিমা মণ্ডলের মাধ্যমে তাদেরকে শনিবার দুপুরে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
(আরকে/এএস/ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫)
