মোঃ জসিম উদ্দিন জুয়েল, টঙ্গী : গাজীপুর মহানগর ৪৯ নম্বর ওয়ার্ড টঙ্গী এরশাদ নগরে  মেজবাহ উদ্দিন (৬০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে রহস্য। দুর্ঘটনা নাকি হত্যা, তদন্ত করছে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে মেয়ে মেরিনা (২৩) এর হাতে থাকা তালা দিয়ে আঘাত করলে বাবা মেজবাহ মারা যায়। 

জানা যায়, মৃত মেজবাহ উত্তরা এলাকায় ছেলে মেয়ে নিয়ে ভাড়া থাকেন। টঙ্গীর এরশাদ নগরে বসবাস করেন মৃত মেজবার সাবেক স্ত্রী আলেয়া (৪০)। মেয়ে মেরিনা প্রায়শই টঙ্গীর এরশাদ নগরে মা আলেয়ার কাছে আসা-যাওয়া করে। জানা যায়, আলেয়া পরবর্তীতে বিয়ে বসে।

ঘটনার দিন মেজবাহ বাজার নিয়ে সাবেক স্ত্রী আলেয়ার বাড়িতে আসে। মেয়ে মেরিনার ডিভোর্স হলে বাবা হিসেবে তিনি বিবাহ ঠিক করেন। কিন্তু এই বিয়েতে রাজি ছিলেন না মেয়ে। আবার মেয়ে যেখানে বিয়ে বসতে চায় সেটাতে রাজি না বাবা মেজবাহ।

ঘটনার দিন বুধবার মেয়ে মেরিনা এরশাদ নগর মায়ের কাছে এসেছে জেনে বাবা মেজবাহ বাজারসদাই করে সেখানে আসেন। দুপুরের দিকে এসকল বিষয় নিয়ে পারিবারিক কলহ উত্তেজনা সৃষ্টি হলে ধ্বস্তাধস্তির একপর্যায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হন মেজবাহ। দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেজবাহকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে বাড়িতে এনে দাফনকাজ করাতে গেলে বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন তৈরি হয় এবং একপর্যায়ে খবর পেয়ে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ এসে হাজির হয়।

এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশের এসআই মেহেদী বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরন করা হবে। ঘটনার তদন্ত করার পর সবকিছুই পরিস্কার হয়ে যাবে।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আত্মীয় বলেন, মেজবাহ এর মেয়ে মেরিনেরও বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ঘরে একটা ১০/১১ বছরের পুত্র সন্তান আছে। মেজবাহ সেই মেয়ের বিয়ের জন্য পাত্র ঠিক করেছিলেন কিন্তু মেয়ে মেরিনা ঐ পাত্রের সাথে বিয়েতে সম্মত ছিলো না।

আবার স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র থেকে জানাযায় মেয়ে মেরিনা মাদকাসক্ত। টঙ্গীর মাজার বস্তিতে ছিলো তার নিয়মিত আসা-যাওয়া। সেও অন্য ছেলেকে বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলো। এসব নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ তৈরি হয়। এরশাদ নগরের ৭ নম্বর ব্লকে সাবেক স্ত্রী আলেয়ার বাড়িতে আসলে একপর্যায়ে বাড়ির ভিতর এসকল বিষয় নিয়ে তুমুল হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে মেয়ে তালা দিয়ে নিজের মাথায় আঘাত করতে গেলে বাধা দেন মেজবাহ। ঐসময় ধ্বস্তাধস্তিতে পড়ে গিয়ে মেজবাহের কপালের ডান ভ্রু এর উপরে আঘাতপ্রাপ্ত হন। পূর্ব থেকে স্ট্রোক আক্রান্ত অসুস্থ মেজবাহ সেখানে আবার স্ট্রোক করে। উল্লেখ্য যে, মেজবার মরদেহের ডান ভ্রু'তে একটি গভীর ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে।

এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ মুঠোফোনে বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত কোনোও পক্ষ থেকে অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(জেজে/এসপি/ডিসেম্বর ১৮, ২০২৫)