মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের আগে গ্রেপ্তার হলেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তাপস
তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : এয়দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া আসেন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নেতা তাপস হালদার (৩৫)। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে কোটালীপাড়া ইউএনও অফিসের সামনে থেকে তাকে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ গ্রেফতার করে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী তাপস হালদারের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট হরিদাস মজুমদার নয়ন বলেন, “সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আমরা ৫-৭ জন মিলিত হয়ে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ইউএনও অফিসে যাই। ইউএনও অফিসে প্রবেশের আগে কোটালীপাড়া থানার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার হাওলাদার আসেন, পরিচিত হন, কিছু কথা বলেন এবং চলে যান। এর পর পুলিশ এসে তাপস হালদারকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।”
তিনি আরও বলেন, “তাপস হালদার ২০০৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকাকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। তবে গত ১৭ বছর তিনি কোনো রাজনৈতিক পদে ছিলেন না। আমাদের জানা মতে, তার নামে আগে কোনো মামলা ছিল না । তাপস হালদারের এলাকায় জনপ্রিয়তা আছে, যদি নির্বাচন করতে পারেন, তা প্রমাণিত হবে।”
কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রিয়াদ মাহামুদ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে দিকে উপজেলা শহরের পশ্চিমপাড় এলাকা থেকে তাপস হালদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য এবং কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের কুমারকান্দি গ্রামের হরেকৃষ্ণ হালদারের ছেলে।
ওসি আরো জানান, ছাত্রলীগ নেতা তাপস হালদারকে পয়সারহাট-গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের কোটালীপাড়া উপজেলার ওয়াবদার হাট এলাকায় নাশকতা সৃষ্টির মামলার সন্দেহ ভাজন আসামি হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) গোপালগঞ্জ রোডমার্চ ঠেকাতে পয়সারহাট-গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের কোটালীপাড়া উপজেলার ওয়াবদার হাট এলাকায় গাছ ফেলে বিক্ষোভ করেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এতে জনমনে ভীতি সৃষ্টি ও যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনায় কোটালীপাড়া থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) এ উত্তম কুমার সেন বাদী হয়ে ১৫৫ জনকে নাম উল্লেখ ও ১ হাজার ৫শ’ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে কোটালীপাড়া থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেন বলেন, এই ঘটনায় তাপস হালদারকে অজ্ঞাত আসামী হিসেবে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া এই মামলায় এখন পর্যন্ত ১শ’ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে এই মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
তবে তাপস হালদারের চীফ নির্বাচনী এজেন্ট হরিদাস মজুমদার বলেন, আমরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি। মনোনয়ন ফরম নিতে পারলে দাখিল করা হবে। তাপস এ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে চান।
(টিবি/এসপি/ডিসেম্বর ২৪, ২০২৫)
