কুমিল্লায় জমি দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন
আব্দুল্লা আল মাশরুফ, কুমিল্লা : কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের গোয়ালমথন এলাকায় পৈত্রিক জমি দখল, চাঁদাবাজি ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের অত্যাচারে পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগী মোঃ আঃ বারেক।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মোঃ আঃ বারেক (৬৪) জানান, তিনি মৃত আলী আশ্রাফের পুত্র। তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি ভাইদের মধ্যে বৈধভাবে ভাগ-বাটোয়ারা সম্পন্ন হয়। কিন্তু তার ছোট ভাই এছাক গোপনে নিজের অংশের ৩ শতক জমি রহুল আমিনের কাছে দুইটি সাব কবলা দলিলের মাধ্যমে বিক্রি করেন। দলিলে উল্লেখিত দাগ ও চৌহুদ্দী অনুযায়ী দখল না নিয়ে ক্রেতা পক্ষ জোরপূর্বক তার দখলীয় জমিতে খুঁটি স্থাপন করে।
তিনি অভিযোগ করেন, বল্লভপুর এলাকার কুখ্যাত মাদক সম্রাট আমিন মিয়া ও সাবেক কাউন্সিলর খুনি সাত্তারের উপস্থিতিতে তার জমি দখল করা হয়। এ সময় তার কাছে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করা হয় এবং টাকা না দিলে তাকে ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী আরও বলেন, সাবেক কাউন্সিলর খুনি সাত্তার বল্লভপুর গ্রামের দুইটি হত্যা মামলার প্রধান আসামি। এছাড়াও গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণ ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায়সহ তার বিরুদ্ধে মোট ১২টি মামলা ও ওয়ারেন্ট রয়েছে। অপরদিকে, আমিন মিয়ার বিরুদ্ধে মাদক আইনে ২০ থেকে ৩০টি মামলা চলমান রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
নিরুপায় হয়ে তিনি সমাজের সর্দার ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের পরামর্শে ২৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোঃ মোতাহের হোসেনের কাছে বিচার প্রার্থনা করেন। তার পরামর্শে গ্রাম্য সালিশ দরবার আয়োজন করা হয়। সালিশে উভয় পক্ষের দলিলপত্র যাচাই করে দাগ ও চৌহুদ্দী অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ করে খুঁটি স্থাপন করা হয়। কিন্তু অভিযোগ অনুযায়ী, রাতের আঁধারে খুনি সাত্তার ও মাদক সম্রাট আমিন মিয়ার নির্দেশে রহুল আমিন গং সালিশের সিদ্ধান্ত অমান্য করে খুঁটি উপড়ে ফেলে। পরবর্তীতে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা অশালীন ভাষায় গালিগালাজ ও সংঘর্ষের চেষ্টা করে।
ভুক্তভোগীর দাবি, ঘটনার পরদিন তাকে, তার ছেলে ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি মিথ্যা নারী নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করা হয়, যা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের প্রশ্ন একাধিক হত্যা ও মাদক মামলার আসামি হয়েও অভিযুক্তরা কীভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়িয়ে চাঁদাবাজি ও জমি দখল করছে।
ভুক্তভোগী মোঃ আব্দুল বারেক সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান, যাতে এলাকায় শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরে আসে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাদেকুর রহমান, আব্দুর রহমান, ইকরাম হোসেন, খোরশেদ আলম, আব্দুল বারেক ও আব্দুল খালেকসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
(এএএম/এসপি/ডিসেম্বর ২৭, ২০২৫)
