গোপালগঞ্জে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে বড়দিন উদযাপন
তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের ইভানজেলিক্যাল লুথারেন চার্চে জাঁকজমকপূর্ণ ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বড়দিন উৎসব উদযাপন করা হয়েছে। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী সদর উপজেলার হাটবাড়ীয়া–পূর্বপাড়ার করপাড়া এলাকায় অবস্থিত চার্চ প্রাঙ্গণে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
বড়দিন উপলক্ষে চার্চটি সাজানো হয় আলোকসজ্জা ও রঙিন সাজে। দিনভর ধর্মীয় প্রার্থনা ও সাংস্কৃতিক আয়োজনের পর সন্ধ্যায় প্রভু যীশু খ্রিস্টের জন্ম থেকে শুরু করে তাঁর ত্যাগ ও মৃত্যুর ঘটনাবলি তুলে ধরে প্রায় ৪৫ মিনিটের পূর্ণদৈর্ঘ্য পটগান পরিবেশন করা হয়, যা দর্শনার্থীদের গভীরভাবে বিমোহিত করে। পরে হিট বাংলাদেশ-এর সার্বিক পরিচালনায় মনোজ্ঞ বাউল সংগীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে এলাকার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। পুরো আয়োজন ঘিরে চার্চ প্রাঙ্গণে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
ইভানজেলিক্যাল লুথারেন চার্চের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শ্যামল সাইমন মণ্ডল বলেন, “প্রতিবছর জিসিএফের মাধ্যমে সরকার থেকে বড়দিন উপলক্ষে একটি আর্থিক সহায়তা পাওয়া যেত। কিন্তু চলতি বছর জিসিএফ সভাপতি রেভারেন্ট স্বপন বিশ্বাস আমাদের মণ্ডলীর নাম ইভানজেলিক্যাল লুথারেন চার্চের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন। ফলে আমরা কোনো সরকারি সহায়তা পাইনি। এবছরের পুরো আয়োজনের ব্যয় আমাকে একাই বহন করতে হয়েছে, যা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ছিল। ভবিষ্যতে যেন আমাদের মণ্ডলীর নাম বাদ না পড়ে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
এ বিষয়ে জিসিএফ সভাপতি রেভারেন্ট স্বপন বিশ্বাস বলেন, “ইভানজেলিক্যাল লুথারেন চার্চ, হাটবাড়ীয়া–পূর্বপাড়া, করপাড়া—এই নামে কোনো নিবন্ধিত চার্চের তথ্য আমাদের কাছে নেই। সরকারি বড়দিনের অনুদান পেতে হলে খ্রিস্টানদের সপ্তাহে অন্তত একদিন গির্জায় নিয়মিত উপাসনায় অংশ নিতে হয়। যদি তারা প্রমাণ দিতে পারে যে সেখানে নিয়মিত উপাসনা কার্যক্রম পরিচালিত হয়, তাহলে সরকারি অনুদান প্রদানে আমরা বাধ্য থাকবো। অন্যথায় কোনো ধরনের সরকারি অনুদান দেওয়া সম্ভব নয়।”
উল্লেখ্য, সরকার প্রতিবছর বড়দিন উদযাপন উপলক্ষে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিভিন্ন গির্জা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ আর্থিক অনুদান প্রদান করে থাকে।
(বি/এসপি/ডিসেম্বর ২৮, ২০২৫)
