রিয়াজুল রিয়াজ, বিশেষ প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় মাদকবিরোধী যৌথ অভিযানে স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যানের ভাইসহ মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তাদের থেকে ১ কেজি ২০০ গ্রাম গাঁজা ও ৪০৪ পিস ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করেছে সেনা বাহিনী ও পুলিশের সমন্নয়ে গঠিত ওই যৌথ বাহিনীর দল।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত থেকে রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল পর্যন্ত বোয়ালমারী উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে এ যৌথ অভিযান চালানো হয় বলে জানা গেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সাতৈর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ওই ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান রাফিউল আলম মিন্টুর আপন ছোটভাই শফিউল আলম পিন্টু (৪৪), মধুখালী উপজেলার দস্তরদিয়া গ্রামের রতন সেখ (৩০) ও সজীব শেখ (৩০), বোয়ালমারীর দাদপুর ইউনিয়নের ইমামুল সেখ (৩৮), আমরদী গ্রামের রেজাউল সেখ (৩২) ও তরিকুল সেখ (১৮) এবং ফরিদপুর সদর উপজেলার মিলন সেখ (২৭) প্রমুখ।

স্থানীয় জনতা ও পুলিশ সূত্রে জানায়, দীর্ঘদিন যাবত বোয়ালমারীতে সক্রিয় একটি সংঘবদ্ধ মাদক চক্র অবাধে মাদক কারবারি করে আসছিলো। এ চক্রের সাথে সাতৈর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের আপন ভাই জড়িত থাকায় কেউ কিছু বলার সাহস পেতেন না। অবশেষে ওই চিহৃিত মাদকচক্রের প্রধান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ভাইসহ ওই মাদকচক্রের ৭জন সক্রিয় সদস্যকে উপরোক্ত পরিমান মাদকদ্রব্যসহ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় সেনাবাহিনী ও স্থানীয় থানা পুলিশের একটি যৌথ টিম।

একাধিক সূত্রে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরে ফরিদপুরের বোয়ালমারী, মধুখালী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সাতৈর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের প্রভাব বিস্তার করে তার ভাই মাদক সরবরাহ করে আসছে। সীমান্তবর্তী জেলা ও রাজধানী থেকে মাদক এনে স্থানীয় ডিলারদের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেওয়া হতো। এছাড়া, ওই এলাকায় কিশোর ও যুবকদের টার্গেট করে চক্রটি ইয়াবা বিক্রি করে এলাকায় মাদক ছড়িয়ে দিতো বলেও অভিযোগ রয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত মাদকচক্রের সদস্যদের থানায় হস্তান্তরের পর তাদের বিরুদ্ধে বোয়ালমারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল আলম বাদি হয়ে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং–৩৪, তারিখ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রীস্টাব্দ।

উপরোক্ত তথ্যগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেইন জানান, 'সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তারকৃত মাদকচক্রের ওই সাত সদস্যকে থানায় হস্তান্তরের পর, তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মাদক মামলা রুজু করা হয়েছে। অতঃপর ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য সহ আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।' এছাড়া, স্থানীয় কিশোর কিশোরী ও যুবসমাজকে মাদকের হিংস্র থাবা থেকে দূরে রাখতে মাদকবিরোধী এধরণের অভিযান নিয়মিতভাবে চলমান থাকবে বলেও জানান ওসি আনোয়ার।

(আরআর/এএস/ডিসেম্বর ২৯, ২০২৫)