নড়াইলে জেঁকে বসেছে শীত, কনকনে হিমেল হাওয়ায় স্থবির জনজীবন
রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইলের লোহাগড়ায় তীব্র শীত জেঁকে বসেছে। কনকনে শীতে এখানকার জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। সূর্যের দেখা নেই ২/৩ দিন। বৃষ্টির মত ঝরছে কুয়াশা। সে সাথে প্রচন্ড হিমেল বাতাস কাহিল করে দিয়েছে লোহাগড়াসহ সমগ্র জনপদের সব বয়সী মানুষকে। প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে মানুষ কাজে যেতে পারছে না। ফলে খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। জবুথুবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষসহ সকল প্রাণীকুল।
গত ৪/৫ দিন যাবৎ দিনভর ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে নড়াইলের আকাশ। দুপুরের দিকে কুয়াশা ভেদ করে সূর্য উঁকি দিলেও তার তেজ একেবারেই নেই। ফলে জড়োসড়ো থাকতে হচ্ছে মানুষসহ গবাদি পশুপাখিদের। তীব্র ঘন কুয়াশা আর প্রচন্ড হিমেল হাওয়ায় এ অঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত।
৪ দিন ধরে চলমান শৈত্য প্রবাহে জুবু থুবু হয়ে পড়েছে নড়াইলের জনপদের মানুষসহ প্রাণীকুল। বিশেষ করে ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ গরম কাপড়ের অভাবে চরম বিপাকে পড়েছেন। সকাল থেকে গভীর রাত অবধি খঁড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা। ৪ দিন ধরে সূর্যের দেখা না মেলায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে পড়েছে মধুমতী নদী পাড়ের হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। চরাঞ্চলে শীত বস্ত্রের অভাব লক্ষ্য করা গেছে। এসব এলাকায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাইরে বের হচ্ছেন না।
রাতের পাশাপাশি দিনের অধিকাংশ সময় ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে আকাশ। ফলে দিনের বেলাতেও নড়াইল-বেনাপোল মহাসড়কের যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে। অব্যাহত ঘন কুয়াশার কারণে বোর ধানের বীজতলা নিয়ে কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তীব্র শীত ও শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত থাকলে বীজতলা 'কোল্ড ইনজুরি'তে আক্রান্ত হতে পারে।
শীতের তীব্রতা নিয়ে রাজুপুর এলাকা সরকারি চাকুরীজীবি চঞ্চল শেখ বলেন, ৩/৪ দিন ধরে সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। কোথাও বা দেখা গেলে তা খুব অল্প সময়ের জন্য। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশার সাথে প্রচন্ড হিমেল বাতাসের কারনে দিনের বেলাতেও মানুষ সাধারণ কাজকর্ম করতে পারছে না। দিনভর ঘরের মধ্যে গায়ে কাঁথা-কম্বল জড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। অথবা আগুনের তাপ নিয়ে গা গরম করতে হচ্ছে। এক কথায় প্রচন্ড ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়ছেন শিশু ও বৃদ্ধসহ সব বয়সের মানুষ। সব কিছু মিলে, প্রচন্ড শীত আর শৈত্য প্রবাহের দরুন জনজীবন আসলেই স্থবির হয়ে পড়েছে।
(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ২৯, ২০২৫)
