স্টাফ রিপোর্টার : ইসলামী ব্যাংক সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অর্থায়নে সম্পৃক্ত থাকতে পারে এমন সন্দেহে ২৭ টি লেনদেন চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রায় সব লেনদেনই করা হয়েছে সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশন’এর মাধ্যমে।

যাকাত তহবিল থেকে বৃত্তি প্রদান, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, এনজিও ও মানবাধিকার সংস্থার অনুকূলে আর্থিক সহায়তা প্রদানের নামে এ সব লেনদেন হয়েছে। প্রাপ্ত অর্থ কোন খাতে ও কিভাবে ব্যয় করা হয়েছে সে সংক্রান্ত যথাযথ প্রমাণপত্র সাহায্যগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে নেই।

উল্লেখ্য, সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ইসলামী ব্যাংকের অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চেয়ে ১৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ তদন্ত প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বলে জানা যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে ‘ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশন’ সম্পর্কে বলা হয়েছে, কোনো প্রকার স্বীকৃত ও আইনগত ভিত্তি ছাড়া ‘ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশন’স্থাপন করা হয়েছে ।

যাকাত তহবিল সম্পর্কে বলা হয়েছে, ইসলামী ফাউন্ডেশনে ইসলামী ব্যাংকের যাকাত তহবিলের হিসাব থাকা সত্ত্বেও ইসলামী ব্যাংক পৃথক একাউন্ট খুলে যাকাত সংগ্রহ করছে। দেশ ও দেশের বাইরে উচ্চ শিক্ষার জন্য সচ্ছলদের মধ্যে যাকাতের অর্থ বৃত্তি হিসাবে প্রদান করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এ তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল মান্নানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি ‘স্পর্শকাতর,’ পরে কথা বলব।

তদন্ত প্রতিবেদনে যেসব প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সুবিধা প্রদানের কথা বলা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- ‘এডুকেশন এইড’ (৫৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা অনুদান প্রদান, বর্তমানে এটি বন্ধ রয়েছে); ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড পীস স্টাডিজ’ ১ কোটি ২৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ‘এসোসিয়েশন ফর মুসলিম ওয়েলফেয়ার এজেন্সীজ ইন বাংলাদেশ’ সাড়ে ১০ লাখ টাকা অনুদান ও সংস্থার তালিকাভুক্ত এনজিওদের মধ্যে ঋণ সরবরাহে ২ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জে পৌনে ৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ আকারে প্রদান; ‘রাবিতা আল আলম আল ইসলামী’ নামক সংগঠনের মাধ্যমে গ্রামীণ স্বাস্থ্যকর্মী গঠনে প্রশিক্ষণ প্রদান (বর্তমানে এর কোনো অস্তিত্ব নেই); এফডিআর করার জন্য ‘ফুয়াদ আল খতীব চ্যারিটি ফাউন্ডেশন’কে ৫৩ লাখ টাকা সুদবিহীন ঋণ প্রদান ‘দি সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস’কে ৪০ লাখ টাকা প্রদান; ‘কিশোর কণ্ঠ’ পত্রিকাকে ২০ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান ও ‘ফয়সাল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড’কে শরীয়াহ আইন বহির্ভূতভাবে ১৩ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া জামেয়া কাশেমিয়া মাদ্রাসার ছাত্রী নিবাস নির্মাণ, ইসলামী ব্যাংক রেসিডেন্সিয়াল ক্যাডেট মাদ্রাসা, ইসলামী ব্যাংক প্রাইমারি স্কুল ও ইসলামী ব্যাংক গার্লস মাদ্রাসার দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহে ফাউন্ডেশন থেকে অর্থ সরবরাহ, বাংলাদেশ সংস্কৃতি কেন্দ্র, ফুলকুঁড়ি আসর এসব প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনসহ ব্যক্তি পর্যায়েও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

(ওএস/জেএ/মে ০৭, ২০১৪)