রায়পুর(লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরপাতা গ্রামে গণধর্ষনের শিকার গৃহবধুকে মঙ্গলবার রাতে মৌখিক তালাক দিয়েছেন সৌদি প্রবাসী স্বামী মোঃ সোহাগ। বুধবার বিকেলে গৃহবধুর স্বজনরা এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। এঘটনায় নির্যাতিত ওই গৃহবধু তার নয় বছরের শিশু কন্যাকে নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন ও হতাশায় মুষড়ে পড়েছেন। এলাকাবাসী ঘটনাটি শুনে ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন।

বুধবার বিকেলে গৃহবধু জানান, গত ২৩ এপ্রিল দুপুরে মেয়েকে নিয়ে নিজ বাড়ি নাগের দিঘিরপাড় থেকে বর্ডার হয়ে স্বামীর বাড়ী একলাসপুরে যাচ্ছিলেন। এসময় উত্তর চরপাতা গ্রামের গঙ্গাজলী খালপাড় সংলগ্ন স্থানে পৌছলে ওৎ পেতে থাকা উত্তর চরপাতা গ্রামের অলি মিয়া মুন্সি বাড়ীর মৃত আমির হোসেনের পুত্র ইউছুফ (২৮), আকবর আলী হাজি বাড়ীর মৃত ইসমাইল হোসেনের পুত্র কামাল হোসেন (৩২), আব্দুল খালেক পন্ডিত বাড়ীর ফজল আহম্মদের পুত্র আনোয়ার হোসেন (২৮) ও অজ্ঞাত যুবক আলতাফের সুপারী বাগানের একটি গর্তে জোর করে ধরে নিয়ে উপর্যিপরী ধর্ষন করে।

এঘটনায় গত ২৬ এপ্রিল রাতে গৃহবধু বাদি হয়ে রায়পুর ধর্ষকদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ ডাক্তারী পরীক্ষার নামে রাতে পুলিশ হেফাজতে রেখে পরদিন দুপুরে ডাক্তারী পরীক্ষা করে বাড়ীতে পাঠায়। ঘটনাটি আত্মসম্মান বাঁচাতে গৃহবধু সাংবাদিকদের সহযোগীতায় নিজ উদ্যোগে মামলা করলেও পিতা ও স্বামীর পরিবারের কাছে ঘটনাটি গোপন রাখেন। পুলিশ ডাক্তারী পরীক্ষার নামে রাত-দিন থানায় রাখায় ঘটনাটি প্রকাশ হয়ে পড়ে। একারনে সহমর্মিতা না দেখিয়ে উল্টো মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মোবাইল ফোনে তিন তালাক দিয়ে ঘর ভাঙ্গার ঘোষনা দেন প্রবাসী স্বামী সোহাগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গৃহবধুর এক স্বজন জানান, গৃহবধু তার দুই লন্ডন প্রবাসী ভাইকে দিয়ে বেকার স্বামী সোহাগকে তিন বছর আগে সৌদি পাঠান। তাদের নয় বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। নির্যাতনের ঘটনাটি স্ত্রীর প্রতি সহমর্মিতা না দেখিয়ে উল্টো তালাক দেয়ায় স্বজন ও এলাকাবাসী হতভম্ব হয়ে পড়েছেন। ঘটনার সাথে জড়িত ধর্ষকদের গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানান তিনি।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক আকন্দ বলেন, গণধর্ষনের ঘটনায় মামলার পর থেকেই ধর্ষকদের গ্রেফতার অভিযান চলছে। তবে তালাক দেওয়ার ঘটনাটি শুনে নিজেই মর্মাহত হয়েছি।


(পিকেআর/অ/মে ০৭, ২০১৪)