সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: নিজের ছেলের নামে অন্য লোককে দিয়ে বাড়ীতে বসিয়ে পরীক্ষা সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সিরাজগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শামসুল আলমকে তিন বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।

সিরাজগঞ্জের সিনিয়র চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিসট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ জুলফিকার উল্লাহ এই রায় প্রদান করেন। এদিকে রায় ঘোষনার পর মঙ্গলবার তাকে চাকুরী থেকে স্থায়ী ভাবে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০১৩ সালে দাখিল পরীক্ষায় সিরাজগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শামসুল আলম ওরফে আরেফিন তার ছেলে মাহমুদুল হাসানের নামে রেজিষ্ট্রেশন ও ফরম পূরণ করত অন্য লোক দিয়ে মাদ্রাসা সংলগ্ন নিজ বাড়ীতে উত্তর পত্র লেখানোর ব্যবস্থা করে। প্রতিদিন বাড়ীতে লেখা উত্তরপত্র মাদ্রাসায় নিয়ে গিয়ে অন্য উত্তর পত্রের সঙ্গে প্যাকেট করে মাদ্রাসা বোর্ডে প্রেরণ করা হত। ঘটনাটি জানাজানি হলে মাদাসার পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজগঞ্জের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আরাফাত রহমান গত ২৬ ফেব্র“য়ারী পরীক্ষা চলাকালে সরেজমিনে অনুসন্ধান করে ঘটনার সত্যতা পান। অনুসন্ধানের প্রাথমিক পর্যায়ে শামসুল আলম তার ছেলে ৪০১২৭০৪ নং রোল নম্বরধারী পরীক্ষার্থী মাহমুদুল হাসানকে অনুপস্থিত দেখান এবং ছেলে নয় বলে দাবী করেন। পরে ম্যাজিস্ট্রেট এর চ্যালেঞ্জের মুখে ঘটনার সত্যতা প্রমানিত হয়। পরের দিন ২৯ ফেব্র“য়ারী বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। দুই মার্চ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত রহমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ শামসুল আলম এবং তার ছেলে মাহমুদুল হাসানকে আসামী করে পরীক্ষা অপরাধ আইন ১৯৮০ এর ৮ ধারায় সিরাজগঞ্জ সদর থানায় মামলা (ফোজদারী) দায়ের করেন। (মামলা নং ২) এরপর মাদ্রাসার পরিচালনা বোর্ড শামসুল আলমকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করেন। মামলা চলাকালে মাহমুদুল হাসান বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন পদে চাকুরী নেয়। এসময় প্রভাবশালী নেতার সুপারিশ থাকায় মাহমুদুল হাসানের নাম চার্জ শীট থেকে বাদ দেয়া হয়।

দীর্ঘ শুনানী শেষে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় সিরাজগঞ্জের সিনিয়র চীফ জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক মোঃ জুলফিকার উল্লাহ গত ১৪ জানুয়ারী উপরোক্ত রায় প্রদান করেন। একই সংগে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও নয় মাসের কারাদন্ডাদেশ দেন।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ বিল্লাল হোসেন বলেন, মামলার রায় ঘোষনার পর গতকাল শামসুল আলমকে স্থায়ী ভাবে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে।

(কেকে/এসসি/জানুয়ারি২০,২০১৫)