সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় দরপত্রের মাধ্যমে পাওয়া এক ব্যক্তির চার লক্ষাধিক টাকার গাছ জোর পূর্বক স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতারা কেটে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর পরেও ঐ ব্যাক্তিকে আটকে রেখে মারধর করে তিনশত টাকার সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরও নেয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় উক্ত ব্যাক্তি থানায় অভিযোগ করলেও অজ্ঞাত কারনে থানা পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছে না। ঘটনাটি ঘটেছে উল্লাপাড়া রেলষ্টেশন এলাকার বিএডিসি সার গোডাউন চত্বরে।

থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উল্লাপাড়া পৌর শহরের ঝিকিড়া মহল্লার সজিব এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধিকারী আরিফুল ইসলাম উপজেলার বিএডিসি সার গোডাউন চত্বরের দুটি পুরাতন ভবন ও ৫১টি গাছ ক্রয়ের দরপত্রে অংশ গ্রহন করে। দরপত্রে সর্বোচ্চ দাতা হওয়ায় গত আট জানুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের প্রকল্প পরিচালক নূরুল হক স্বাক্ষরিত পত্রে তাকে অনুমোদন দেয়া হয়। কার্যাদেশ পাওয়ার পর আরিফুল পুরাতন দুটি ভবন বাইরে বিক্রি করে দিয়ে গাছ গুলো নিজের নিয়ন্ত্রনে রেখে কাটতে গেলে উল্লাপাড়া ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলী আহসান, ছাত্রলীগ নেতা শাহাদত হোসেন ও যুবলীগ নেতা মমতাজ হোসেন বাঁধা দেয়। এর পর থেকে নেতারা জোর পূর্বক গাছ কাটা শুরু করেছে। গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত তারা বড় বড় মেহগুনী, আম, কাঠালসহ চারটিগাছ কেটে নিয়ে গেছে। এবং কাটা অব্যহত রয়েছে।

আরিফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, গাছ কাটার সময় ছাত্রলীগ যুবরীগের নেতারা দলবল নিয়ে আমাকে ও আমার ছোট ভাইকে বাধা দিয়ে আটকে রেখে বেদম মারপিট করে জোরপূর্বক সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। এর পর থেকে তারা গাছগুলো লোকদিয়ে কেটে নিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ দিলে থানা পুলিশ ছাত্রলীগ নেতা মমতাজকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে বিষয়টি আপোষ মিমাংশার কথা বলে উপজেলা আ. লীগের সভাপতি মীর শহিদুল ইসলাম ওই ছাত্রলীগ নেতাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনে। কিন্তু অদ্যবদি তিনি এ ঘটনার কোন সুরাহ দেননি। আমি বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশের কাছে এবং নেতাকর্মিদের কাছে ধরনা দিলেও কোন লাভ হচ্ছে না।

গাছ কাটা স্থানে উপস্থিত মোঃ ইসাহাক আলী জানান, বিষয়টি নিয়ে আ. লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে দুটি পক্ষের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা একটি পক্ষের নিকট থেকে গাছ গুলো কিনে নিয়ে কাটছি।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা শাহাদৎ হোসেন ও যুবলীগ নেতা মমতাজ উদ্দীন জানান, প্রথমে আমরা আরিফুলের সঙ্গে সমঝোতা করে দরপত্রে অংশ গ্রহন করি। আরিফুলের নামে কাজটি পাওয়ার পর সে আমাদের কাছে বিক্রয় করে দিয়ে ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে দিয়েছে। যে কারনে আমরা গাছ গুলো কেটে নিচ্ছি। তাকে মারধর বা জোর করে স্বাক্ষর করে নেয়ার কোন প্রশ্নই উঠে না। আরিফুল একজন বিএনপির লোক। কতিপয় ছাত্রলীগের নেতাদের হাত করে সে আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরন করছে।

এ বিষয়ে উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল হুদা জানান, গাছকাটার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মিরা এক সঙ্গে বসে ষ্ট্যাম্পে লিখিত করায় মিমাংসা হয়েছে বিধায় মামলা নেয়া হয়নি। তাছাড়া যদি অন্যায় ভাবে গাছ কেটে নেয়া হয় তাহলে অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এএসবি/এসসি/জানুয়ারি০২,২০১৫)