বাগেরহাট  প্রতিনিধি : বাগেরহাটের চিতলমারীতে ওয়াপদা বেড়িবাঁধের পাশের জলাশয় থেকে গত কয়েক মাস ধরে লাখ লাখ ফুট বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা। এসব ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে না পারায় তারা সরকারি জলাশয় থেকে কোটি টাকার বানিজ্য করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় ইতিমধ্যে বেড়িবাঁধের একটি বিশাল অংশে ফাটল ধরেছে। যে কোন সময় বন বিভাগের কয়েক শ’ গাছপালাসহ আশপাশের বসতবাড়ি ও ফসলী জমি ডেবে যেতে পারে বলে ধারনা করছেন এলাকাবাসি। ফলে ওই এলাকার পার্শ্ববর্তী দুই-তিন গ্রামের মানুষ আতংকিত হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেও বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়নি বলে এলাকাবাসিরা জানিয়েছেন।

এলাকাবাসীরা জানান, উপজেলা সদরের কুরমুনি গ্রামের ওয়াপদা বেড়িবাঁধের পাশের সরকারি জলাশয় থেকে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে লাখ লাখ ফুট বালু উত্তোলন করে আসছে। এতে বর্তমানে ওই জলাশয় সংলগ্ন বেড়িবাঁধের একটি বিশাল অংশে ফাটল ধরেছে। ফাটলের মধ্যে বন বিভাগের কয়েক শ’ গাছপালাসহ আশপাশের বসতবাড়ি ফসলী জমি রয়েছে। এ ঘটনায় কুরমুনি, সুরশাইল, নবীনগর ও বেড়িবাঁধের উপর বসবাসকারী লোকজনের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও আতংক বিরাজ করছে। এ ভাবে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে কুরমুনি গ্রামের কৃষ্ণ বড়াল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে কুরমুনি গ্রামের লিটন বড়াল, কৃষক স্বপন বাইন, মনমথ বিশ্বাস, রেজাউল দাড়িয়া, প্রদীপ পাল, সুরশাইল গ্রামের মুজিবর তালুকদারসহ অসংখ্য ব্যাক্তি জানান, এভাবে বালু উত্তোলন করায় ফাটল দেখা দেয়ায় তারা চরম আতংকের মধ্যে রয়েছেন। তারা আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেও এখনও বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি।
চিতলমারী উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী সুখেন্দ্র নারায়ন জানান, বালু উত্তোলনের ফলে যেহেতু ইতি মধ্যে ফাটল ধরেছে। ওই জলাশয়ের পানি কমে গেলে আশপাশের একটি বিশাল অংশ মাটির নিচে ডেবে যেতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।
উপজেলা বন কর্মকর্তা চিম্ময় মধু জানান, ফাটলের অংশে তাদের সামাজিক বনায়ন রয়েছে। বিষয়টি লিখিত ভাবে উর্ধতন কতৃপক্ষকে জানান হচ্ছে।
চিতলমারী থানার ওসি দিলীপ কুমার সরকার জানান, একটি অভিযোগ পেয়ে তখন বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছিল। বিষয়টির ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্থায়ী ব্যাবস্থা নিতে পারেন বলেও তিনি জানান।
চিতলমারী উপজেলা প্যানেল চেয়ারম্যান শেখ রাশেদুজ্জামান পুকুল জানান, এই প্রভাবশালী বালু খেকোদের কবলে পড়ে অসহায় হয়ে পড়েছে এলাকার নীরিহ এলাকাবাসি। এরা সরকারি জলাশয় থেকে প্রায় কোটি টাকার বালু উত্তোলন করে ডোবা-নালা ও নিচু জায়গা ভরাটসহ মোটা অংকের অর্থ বানিজ্যে নেমেছে।
(একে/পিবি/ফেব্রুয়ারি ৩,২০১৫)