রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : স্মৃতি আক্তার (১৩)।  পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীতে জিপিএ ৫ অর্জন করেছিলেন মেধাবী এ ছাত্রী। সে স্থানীয় পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ও লক্ষ্মীপরের রায়পুর শহরের দক্ষিন দেনায়েতপুর গ্রামের দিনমজুর অজি উল্যার মেয়ে।

গত তিন দিন ধরে স্মৃতি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। বৃহস্পতিবার সকালে বান্ধবী কান্তাকে স্মৃতি ফোন করে বলেন পরিবারের লোকজন তাকে জোর করে বিয়ে দেয়ার সব আয়েজন সম্পন্ন করেছে। বর একই এলাকার চল্লিশোর্ধ এক চা দোকানদার। স্মৃতি এ বাল্যবিয়ে বন্ধে কান্তার সহায়তা চেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। দেরী না করে বান্ধবী কান্তা প্রধানশিক্ষকের মাধ্যমে ঘটনাটি ইউএনওকে জানান। পরে ইউএনও পুলিশ পাঠিয়ে দেনায়েতপুর থেকে স্মৃতিসহ তার মা পারুল বেগম ও ভাই মান্নাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।

এ সময় বর ও তার লোকজন পালিয়ে যায়। পরে তাদের উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইউএনও শারমীন আলমের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। স্মৃতির ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেওয়া যাবে না এবং লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার শর্তে মা ও ভাইয়ের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

স্মৃতি আক্তার বলেন, আমি আবার লেখাপড়া করতে পারব এটা জেনে আনন্দে লাগছে। আমার বিয়েটা বন্ধ হওয়ায় বান্ধবী কান্তা, প্রধানশিক্ষক ও ইউএনওর কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ।

রায়পুর থানার উপ-পরিদর্শক ময়নাল হোসেন বলেন, আমার চাকরী জীবনে প্রথমে এমন সাহসিকতার ঘটনা দেখলাম।


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমীন আলম জানান, স্মৃতির বান্ধবী কান্তার সাহসিকতা দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ পাঠিয়ে স্মৃতিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তার মা ও ভাইয়ের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

(পিকেআর/এএস/ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫)