রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুর থেকে ঢাকাগামী সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখেছে পরিবহন মালিকরা। দেশ ব্যাপি ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ-হরতালের কারণে গত ৫ জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার ৫১ দিন পর্যন্ত রায়পুর থেকে সময় ধরে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন না ছাড়ায় যাত্রীরা ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ফেনীসহ বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছেন অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে। তবে দিনের বেলায় লক্ষ্মীপুর-ফরিদগঞ্জ সড়কসহ অভ্যন্তরীণ রুটে বেটারি চালিত রিকশা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল না করায় বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে উন্নত চিকিৎসার জন্য যেতে ভাড়ায় অ্যাম্বুলেন্স পাচ্ছেন না। এতে সংকটাপন্ন রোগীরা দুর্ভোগে পড়ছেন। এ ছাড়া দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া। অতিরিক্ত টাকা দিয়েও অ্যাম্বুলেন্স মিলছে না রোগীদের।
ব্যবসায়ী কামাল হোসেন জানান, তার এক রোগীকে গত সোমবার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়া জরুরি হয়ে পড়ে। কিন্তু ওই দিন কোনো অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায়নি। পরদিন মঙ্গলবার বিকেলে দ্বিগুণ ভাড়ায় একটি অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায়। বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া দেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রায়পুর উপজেলায় একটি সরকারি ও সাতটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স আছে। স্বাভাবিক সময়ে ঢাকায় যেতে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া চার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। অবরোধের কারণে রায়পুর থেকে ঢাকা চট্টগ্রামসহ বিভিন্নস্থানে কোনো বাস চলাচলা না করায় অ্যাম্বুলেন্সের চাহিদা বেশি হয়ে গেছে। এতে অ্যাম্বুলেন্সের সংকট থাকায় ভাড়া উঠেছে ৮ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত।

রায়পুর বাড়ি ঢাকায় একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বাসে করে ঢাকা গেলে মাত্র ৫’শ টাকা খচর হয়। কিন্তু ৮ হাজার টাকা খরচ করে অ্যাম্বুলেন্সে ভাড়া দিয়ে ঢাকা যাচ্ছি পেট্রোলবোমার ভয়ে। কারণ অ্যাম্বুলেন্সে অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচির বাহিরে থাকেন।
কয়েকজন চিকিৎসক জানান, মাঝেমধ্যে অনেক রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন থাকে। তাদের জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা নেয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু তারা অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া পান না। বেশি টাকা দিয়েও অনেক সময় অ্যাম্বুলেন্স মিলছে না।
রায়পুর-ঢাকা বাস মালিক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তানভীর হায়দার চৌধুরী রিংকু যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা শিকার করে জানান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশনের নির্দেশ রয়েছে অবরোধে কোনো গাড়ির ক্ষতি হলে বাংলাদেশ সরকার এর দায় নেবেন।
লক্ষ্মীপুর থেকে সব বাস চলাচল শুরু করেছে। রায়পুরের বাস কাউন্টারগুলোকে টিকির বিক্রির জন্য কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে রায়পুর থেকে সব বাস চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি দাবি করেন।
(পিকেআর/পিবি/ফেব্রুয়ারি ২৬,২০১৫)