শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুর জেলা হাসপাতালের সিনিয়র ষ্টাফ নার্স চম্পা বেগমের বাসায় অবৈধভাবে গর্ভপাত ঘটানোর কারণে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

রবিবার সারারাত ওই গৃহবধূর স্বজনরা তার লাশ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে অ্যাম্বুলেন্সে ফেলে রেখে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে দোষী নার্সের শাস্তি দাবী করেন। ১৬ মার্চ সোমবার দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নিহত গৃহবধুর স্বজনরা জানান, গত ১০ মার্চ মঙ্গলবার জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার সরদার পাড়া গ্রামের মকবুল হোসেনের স্ত্রী ৫ মাসের গর্ভবতী দিলারা বেগম (৩০) শেরপুর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন। এসময় হাসপাতালের ষ্টাফ নার্স চম্পা বেগম ওই গৃহবধুকে ফুসলিয়ে হাসপাতালের কাছেই তার বাসায় নিয়ে গিয়ে অবৈধভাবে গর্ভপাত ঘটিয়ে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়। বাড়ীতে যাওয়ার পর ৩ সন্তানের জননী ওই গৃহবধুর অবস্থা খারাপ হলে ১৪ মার্চ শনিবার দুপুরে আশংকাজনক অবস্থায় তাকে ফের শেরপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একপর্যায়ে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শহিদুল ইসলাম রবিবার দুপুরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড (স্থানান্তর) করেন। দরিদ্র গ্রহবধু দিলারা বেগমের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ার হোসেনের নির্দেশে কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্সে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে রবিবার সন্ধ্যায় সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

এদিকে রবিবার রাতে নিহত গৃহবধূর বিক্ষুব্ধ স্বজনরা এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং সংশ্লিষ্ট নার্সের বিচার দাবী করে তার লাশ হাসপাতালের জেলা হাসপাতালে জরুরী বিভাগের সামনে সারারাত ফেলে রাখে। পরে সোমবার দুপুরে পুলিশের মধ্যস্থতায় স্বজনরা লাশ বকশীগঞ্জে নিয়ে যায়।

বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও গৃহবধূর প্রতিবেশি সাইফুল ইসলাম বিজয় বলেন, বিচার চেয়ে শেরপুর জেলা হাসপাতাল চত্বরে লাশ রাখা হলে নার্সের লোকজন দিলারার মা ও স্বজনদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এতে আমরা ভয়ে মামলা না করেই সোমবার দুপুরে লাশ বকশীগঞ্জে নিয়ে আসি। তিনি বলেন, আমরা এ ঘটনার বিচার চাই, এ মৃত্যুর জন্য দায়ী নার্স চম্পা বেগমের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানাই।

এ ভ্যাপারে শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, গর্ভপাতের ঘটনাটি হাসপাতালে ঘটেনি। তাছাড়া ওই নার্স হাসপাতাল ক্যাম্পাসে থাকেন না। ঘটনাটি নার্সের বাড়ীতে ঘটেছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তছাড়া বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকেও জানান হবে। এ বিষয়ে শেরপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাজাহান মিয়া বলেন, গৃহবধূর আত্মীয়-স্বজনকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ এখনও দাখিল করেনি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নার্সের সাথে কর্মস্থলে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে।


(এইচবি/এসসি/মার্চ১৭,২০১৫)