সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:সন্তান প্রসবের সময় মস্তিস্কে আঘাত জনিত কারণে সদ্যজাত শিশুকে বেসরকারি ক্লিনিক সাতক্ষীরা হাসপাতালে ভর্তি করেও শেষ রক্ষা হলো না। ছাড়পত্র দেওয়ার আগেই ভুল ইনজেকশান প্রয়োগের ফলে সোমবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তার মৃত্যু হলো।

মৃত্যুর পরপরই ক্লিনিকের খরচ দু’ হাজার ৮০০ টাকা ও ঔষধ খরচ এক হাজার ৭০০ টাকা আদায় করে নিয়ে তড়ি ঘড়ি করে মৃত বাচ্চাসহ স্বজনদের বের করে দেওয়া হলো। এটা কোন সভ্য সমাজে চলতে পারে না। এ ধরণের ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

সোমবার সকাল ১১ টার দিকে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের বাসভবনের দক্ষিণ পাশে ডক্টর’স হাসপাতালের সামনে বসে মৃত সন্তানকে পিসিমা শান্ত বালার কোলে দিয়ে এভাবেই কাঁদতে কাঁদতে মুর্ছা যাচ্ছিলেন পাটকেলঘাটা থানার নগরঘাটা কাপাসডাঙার অনাথ শীলের স্ত্রী রীনা শীল।

রীনা শীল বলেন, গত ১১ মার্চ ভোরে সাতক্ষীরা শহরের নিরাময় ক্লিনিকে তিনি একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব হলেও মাথায় আঘাত জনিত কারণে সমস্যা দেখা দেয়। এ কারণে ওই ক্লিনিকের কর্মচারি মানিক তাকে সন্তানসহ ডক্টর’স ক্লিনিকে ভর্তি করান।

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ আজিজুর রহমান বাচ্চার চিকিৎসার দায়িত্ব পালন করছিলেন। বাচ্চার শারীরিক অবস্থা উন্নতি হওয়ায় সোমবার সকাল ৯ টার দিকে ছাড়পত্র দেওয়ার কথা বলা হয়। সোমবার সকাল সোয়া সাতটার দিকে নার্স আমেনা খাতুন ময়না বাচ্চার শরীরে ইনজেকশান পুশ করার সঙ্গে সঙ্গে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। বুক, পেটসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ কালো হতে শুরু করে। একপর্যায়ে সে মারা যায়। জানতে চাইলে ওই নার্স ও ক্লিনিকের এক কর্মকতা তাকে বিল মিটিয়ে চলে যেতে বলেন। টাকা দিতে দেরী হওয়ায় তাদেরকে কটুক্তি করা হয়।

এ ব্যাপারে ডক্টর’স হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন ভুল ইনজেকশন প্রয়োগের ফলে নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এ ধরনের রোগী ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে বাঁচে না। সোমবার ভোরে ওই বাচ্চাটির অবস্থা খারাপ হলে কতর্ব্যরত চিকিসক ইসলামী হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ঙাঃ শফিকুল ইসলামের সঙ্গে পরামর্শ করেন কর্তব্যরত সেবিকা আমেনরা খাতুন ময়না। একপর্যায়ে কার্ডিয়াক ম্যাসেজ দিয়ে তাকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা করা হয়।

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ আজিজুর রহমানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বললে তিনি বাইরে আছেন বলে এ প্রতিবেদককে জানানো হয়।


(আরএনকে/এসসি/মার্চ১৭,২০১৫)