আব্দুস সালাম বাবু(বগুড়া): বাম্পার ফলন পেয়ে খুশি হয়েছে বগুড়ার মরিচ চাষিরা। জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলায় রোদে শুকানো, আর ঢাকার বিভিন্ন কোম্পানীর এজেন্টদের ও পাইকারদের সাথে দাম মেটানো নিয়ে চলছে কর্মচঞ্চলতা।

বগুড়ায় এবার ৭০ হাজার মেট্রিক টন মরিচ (শুকনা) উৎপাদন হয়েছে। মরিচের ভাল ফলন হওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় যে পরিমান মরিচ চাষ হয় তার সিংহভাগ মরিচ চাষ হয় পূর্ব বগুড়ায়। পূর্ব বগুড়ার গাবতলী, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলা নদী বেষ্টিত বলে পলির কারণে মরিচ চাষে ভাল উৎপাদন পাওয়া যায়।

গত বছর বগুড়ায় সাড়ে ৪ হাজারেরও বেশি হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে চাষাবাদ হয় প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে। কৃষি অফিসের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও চাষাবাদ বেশি জমিতে হয়। চলতি বছর জেলায় আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫ হাজার হেক্টর সেখানে চাষাবাদ হয়েছে সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে। প্রাথমিকভাবে শুকনা মরিচ আকারে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু চাষাবাদের জমি বৃদ্ধ পাওয়ার কারণে ফলনও বৃদ্ধি পেয়েছে।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার মরিচ চাষি আবুল হোসেন জানান, চাষাবাদের শুরু থেকে আবহাওয়া ভাল থাকায় মরিচের ভাল ফলন পাওয়া গেছে। কাঁচা আকারে বিক্রির পর এবার শুকনা আকারে বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। গত বছর ৬ হাজার টাকা মন বিক্রি করা হয়েছে। এবার ৭ হাজার টাকা মন বিক্রি হবে বলে পাইকাররা দাম করেছে।

একই উপজেলার মরিচ ব্যবসায়ি আব্দুর রহমান জানান, হাটে পাইকারি ব্যবসায়িদের চেয়ে ঢাকার বিভিন্ন মসলা প্রতিষ্ঠানের নিযুক্ত এজেন্টরা আগেই চাষিদের সাথে কথা বলে মরিচ কিনে থাকে। এবারো তাই হয়েছে।

চলতি বছর সারিয়াকান্দি উপজেলায় প্রতি বিঘা জমিতে বীজ, সার, কীটনাশক, পানি সেচ ও পরিচর্যাসহ মরিচ চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার টাকা। গত বছরের মত এ বছর মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ৬ মন করে মরিচ উৎপাদন হয়েছে। জেলার গাবতলী, ধারাবর্ষা চর, কাজলা চর, বোহাইলের চর, মথুরাপুর, গোসাইবাড়ি, এলাঙ্গী, ধুনট, পেঁচিবাড়িসহ পার্শ্ববতী ঘুরে দেখা যায়, মৌসুমের শুরু থেকে কৃষক ভাল দামে কিছু কিছু করে শুকনা মরিচ আবাদ ও বিক্রি শুরু করছে।

বগুড়ার সারিয়াকান্দির নিজবলাইল গ্রামের মরিচ চাষী আব্দুল আজিজ মোল্লা জানান, বর্তমানে বাজারে মরিচ বিক্রি হচ্ছে প্রতি মন ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। মরিচ শুকানোর উপর দাম ধরা হচ্ছে। শুকনা মরিচ খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯ হাজার টাকা মন।

বগুড়া জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক চন্ডীদাস কুন্ডু জানান, চলতি বছর শুকনা মরিচ উৎপাদন হবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে। ৫০ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন ধরা হলেও বেশি জমিতে চাষ হওয়ায় উৎপাদন দাঁড়াবে ৭০ হাজার মেট্রিক টনে।

(এএসবি/এসসি/মার্চ১৭,২০১৫)