পিরোজপুর প্রতিনিধি : নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠি থেকে চৌঠাইমহল পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশের ৩১২ টি মেহগনি ও চম্পল গাছ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীরামকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ মালেক বেপারী।

এর আগে স্থানীয় যুবলীগ ছাত্রলীগের কর্মীরা রাতের অন্ধকারে রাস্তার পাশের বেশ কিছু গাছ কেটে বিক্রি করে। এ নিয়ে পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রচার হওয়ার পরও এবার প্রশাসনের যোগসাযোশে টেন্ডারের মাধ্যমে প্রায় বিশ কোটি টাকার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক এমএ মালেক বেপারী। এরই মধ্যে রাস্তার দুই পাশের গাছগুলোতে বিক্রির জন্য ছাল তুলে নাম্বার দেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসীরা জানান, গাছগুলো কাটা হলে কার্পেটিং এর রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি একই সাথে ওই এলাকা থেকে একত্রে হারিয়ে যাবে বয়সী গাছগুলো। এ ব্যাপারে মধ্য জয়পুর গ্রামের মোহাম্মদ হান্নান মাঝি বলেন, গাছ কাটার বিশেষ কোন প্রয়োজন পরে নাই। বহুদিনের ঐতিহ্য এ গাছ গুলো হঠাৎ বিক্রির কেন প্রয়োজন পরলো আমরা বুঝতে পারছি না।
এ বিষয় ওই এলাকার মোহাম্মদ ইলিয়াস শেখ বলেন, গাছের মালিক জেলা প্রশাসক। ইউনিয়ন পরিষদ এ গাছ কি ভাবে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়।
গাছগুলো বিক্রির ব্যাপারে শ্রীরামকাঠি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মালেক বেপারী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়নের জন্যই গাছ বিক্রির টাকা ব্যবহার করা হবে। এজন্য যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টেন্ডারের মাধ্যমে গাছগুলো বিক্রি করবেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি দে বলেন, রাস্তার দুই পাশের ৩১২ টি গাছ বিক্রির জন্য শ্রীরামকাঠি ইউনিয়ন পরিষদ আমার কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। উপজেলা কমিটির মিটিংয়ে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গাছের নাম্বার দেয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বে যে তিনশ বারো টি গাছ রয়েছে তাতেই কেবল নাম্বার দেয়া হয়েছে।
নাজিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অমূল্য রঞ্জন হালদার বলেন, মালেক বেপারী বিগত দুই বছর ধরে গাছগুলো বিক্রির পায়তারা করছে। তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে গাছ বিক্রির ব্যাপারে বিরোধীতা করায় কোন সুবিধা করতে পারেনি।
জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আক্রাম হোসেন খান বলেন, আওয়ামী লীগের লোক কেন আমার রক্তের সম্পর্কের কেউ হলেও আমি এর বিরোধীতা করতাম। কারন সরকারের অনুমতি ছাড়া রাস্তার পাশের গাছ কাটা বৈধ নয়।
প্রসঙ্গত, গেল সপ্তাহে বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মনজু পিরোজপুর জেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভায় বলেন, কোন ভাবেই বেপরোয়া গাছ কেটে পরিবেশের ভারসম্য নষ্ট করা যাবে না।
এ বিষয়ে জেলা বন বিভাগ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ মজুমদার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের গাছ হোক আর যে বিভাগের গাছ হোক বন বিভাগের পূর্বানুমতি ছাড়া কাটতে পারবে না। নাজিরপুর-শ্রীরামকাঠি সড়কের পাশের গাছে নাম্বর দেয়া বা কাটা সম্পর্কে বন বিভাগের কেউ কিছু যানে না।
(এসএ/এএস/মে ১২, ২০১৪)