আঞ্চলিক প্রতিনিধি(বরিশাল):স্কুলের বাদ্যযন্ত্র কেনার নামে ধার্যকৃত চাঁদার টাকা দিতে না পারার অপরাধে জেলার গৌরনদী উপজেলার পিঙ্গলাকাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর ৪০ জন ছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে ওই স্কুলের শিক্ষক নীল কান্ত বিশ্বাস।

এছাড়া স্কুল কর্তৃপক্ষ একই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রেজিষ্ট্রেশন ফি বাবদ বোর্ডের ধার্যকৃত ৮০ টাকার স্থলে ৫০০ টাকা আদায় করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব অপরাধের বিচার চাওয়ার লোকজনসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের নিয়ে ভূরিভোজের মাধ্যমে বিষয়গুলো ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে বিষয়টি নিয়ে অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

আহত শিক্ষার্থীরা জানায়, স্কুলের বাদ্যযন্ত্র ক্রয়ের জন্য তাদের প্রত্যেকের কাছে ২০ টাকা চাঁদা ধার্য করা হয়। বুধবার সকালে সহকারী শিক্ষক নীল কান্ত বিশ্বাস ক্লাশে এসে চাঁদার টাকা চান। টাকা দিতে না পারার অপরাধে তিনি (নীল কান্ত) জোড়া বেত দিয়ে বেধরকভাবে পিটিয়ে ৮ম শ্রেণির ৪০ জন ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করে।

এ সময় কয়েকজন ছাত্র অজ্ঞান হয়ে পড়েলে অন্য শিক্ষকরা এসে ছাত্রদের উদ্ধার করে আহত ছাত্র রিফাত, শফিক, ফুয়াদ, রিপন, আশ্রাফুল, ফয়সাল, লিমন, রাসেলসহ ১০ জনকে স্কুলে ডাক্তার ডেকে এনে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা প্রদান করেন। শিক্ষক ও কমিটির লোকজনের ভয়ে অন্য ছাত্রদের গোপনে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অভিভাবকেরা জানান, জেএসসির রেজিষ্ট্রেশন ফি বাবদ বরিশাল শিক্ষা বোর্ড প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র ৮০ টাকা ফি ধার্য করলেও পিঙ্গলাকাঠী হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ ৮০ টাকার স্থলে সম্পূর্ন অবৈধভাবে ৫০০ টাকা করে আদায় করেছে। উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ওই এলাকার বাসিন্দা নয়ন শরীফ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, প্রধান শিক্ষক মাসহুরা বেগম স্কুল ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় প্রভাশালী সদস্যের যোগ-সাজশে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়সহ নানাভাবে অর্থ আদায় করে আসছেন। তিনি অপকর্ম আড়াল করতে শুক্রবার দুপুরে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও সরকারীদলের স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী নেতাদের নিয়ে স্কুল লাইব্রেরীতে ভূরিভোজের আয়োজন করেন।

এ ব্যাপারে পিঙ্গলাকাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসহুরা বেগমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শিক্ষক নীল কান্ত বিশ্বাস তার কৃতকর্মের জন্য ভুল স্বীকার করে অনুশোচনা করেছেন।

জেএসসির রেজিষ্ট্রেশন ফি বাবদ ৫০০ টাকা আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি জানান, অন্য স্কুল যেভাবে ফি আদায় করেছে আমরাও একইভাবে আদায় করেছি। সম্মানিত ব্যক্তিদের স্কুলে দাওয়াত দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়েছে বলেও তিনি স্বীকার করেছেন। তবে কি কারণে আপ্যায়ন করা হয়েছে তা তিনি বলতে পারেনি।

(টিবি/এসসি/মার্চ২৭,২০১৫)