কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:সমাজের হতদরিদ্র অবহেলিত শিশু-কিশোরদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় গড়ে উঠেছে একটি ব্যতিক্রমী পাঠশালা। উপজেলার ভূঁইয়া বাজারে পরশমণি সমাজকল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে ভূঁইয়া বাড়ীতে এ পাঠশালাটি গড়ে তোলা হয়।

এখানে শারীরিক প্রতিবন্ধী ও সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে বিনামূল্যে পাঠদান দেয়া হয়। সংস্থাটির নিজ খরচে স্বাস্থ্যসেবা, খাতা-কলমসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণও দেয়া হয়।

সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহায়তা পেলে একটি আধুনিক পাঠশালা হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এটি। পাকুন্দিয়া উপজেলার পাটুয়াভাঙ্গা ভূঁইয়া বাজারের পাশেই লিজকৃত বাড়ীতে পরিচালিত হচ্ছে পরশমনি শিক্ষা একাডেমীর কার্যক্রম। ৬ জন শিক্ষকের পরিচালনায় শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ১২০ জন শিক্ষার্থী বিনামূল্যে পড়ালেখার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা, নাস্তা, বই খাতা-কলম পায়। তাদের মধ্যে ৩ জন শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রয়েছে। অভিভাবকরা জানান, এখানে আমাদের সন্তানরা বিনামূল্যে পড়ালেখা শিখতে পারায় কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।

জানা যায়, ইউনিসেফের সাহযোগিতার জন্য কর্তৃপক্ষের বরাবরে ইন্টারনেটে আবেদন করলে গত ১৮ মার্চ বেলজিয়াম থেকে ইউনিসেফের একটি প্রতিনিধি দল বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে সার্বিক খোঁজখবর নেয়। এছাড়াও আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা থেকে আলাদা আলাদা ভাবে প্রতিনিধি দল ইতিমধ্যে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছে। বর্তমানে লাইট অফ হোপ নামে একটি দেশীয় সংস্থা বিদ্যালয়টিকে ডিজিটাল হিসেবে রূপান্তরের আগ্রহ প্রকাশ করছে।

পরশমণি শিক্ষা একাডেমীর প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সানাউল্লাহ ভূঁইয়া জানান, আমাদের এলাকার প্রতিবন্ধী ও দরিদ্র শিশুদের জন্য কেউ এগিয়ে অসে না। তাই সেইসব ছেলেমেয়ের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াতে ২০০৯ সালে এলাকায় ‘পরশমনি সমাজকল্যাণ সংস্থা’ নামের একটি সংগঠন গড়ে তুলেছি। এ সংগঠনের সামান্য আয় দিয়ে শিশুদের পড়াশুনার খরচ চালাতে খুবই কষ্ট হয়। সংগঠনের ফান্ড কম থাকায় এ উদ্যোগকে প্রসারিত করা সম্ভব হচ্ছে না। ভবিষ্যতে ফান্ডের ব্যবস্থা হলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করা হবে। এ জন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও দানশীলদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান তিনি।


(পিকেএস/এসসি/এপ্রিল০৪,২০১৫)