স্টাফ রিপোর্টার : ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ডিজিটালাইজড করার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরির বাধ্যবাধকতা আসছে।

এতে ক্লাস শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যেই প্রতিদিনের হাজিরাসহ সব তথ্য পাবে মন্ত্রণালয়। ফলে মনিটরিং কার্যক্রম আরো জোরদার হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

এরই মধ্যে সব সরকারি কলেজের ওয়েবসাইট তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বেসরকারি কলেজগুলোর ওয়েবসাইট তৈরির তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। গত ৯ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব কাউসার নাসরীন বেসরকারি কলেজের ডাইনামিক ওয়েবসাইট তৈরির বিষয়ে একটি চিঠি ইস্যু করেন, যা বাস্তবায়নের জন্য এরই মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে। আর আগামী ৩০ জুনের মধ্যে সব মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ওয়েবসাইট তৈরির জন্য একটি খসড়া পরিপত্রে মতামত গ্রহণও শেষ করেছে মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (মাধ্যমিক-১) রুহী রহমান বলেন, `আমরা ৩১ মার্চ পর্যন্ত ওয়েবসাইট তৈরির বিষয়ে মতামত গ্রহণ করেছি। বেশ কিছু মতামতও পেয়েছি। প্রয়োজনীয় মতামত সংযোজন করা হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করা হবে।`

খসড়া পরিপত্রে বলা হয়েছে, যেসব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট নেই তাদের ওয়েবসাইট তৈরি করে এর ঠিকানা আগামী ৩০ জুনের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে। যেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই সেখানে স্থানীয় জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের সহযোগিতায় সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে সরকারি ব্যয়সংক্রান্ত বিধি মোতাবেক ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ওয়েবসাইট তৈরি করবে।

ওয়েবসাইটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত পরিচিতি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ডাটাবেইস, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের তথ্য, একাডেমিক ক্যালেন্ডার, বিভাগভিত্তিক ক্লাস রুটিন, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার ফল, ভর্তির তথ্য, ইংলিশ ফর টুডের লিসেনিং টেক্সট, ফরম, নোটিশ, শিক্ষার্থী প্যানেল, শিক্ষক প্যানেল, অভিভাবক প্যানেল, ফটো গ্যালারি, লাইব্রেরির বিভাগভিত্তিক বইয়ের তালিকা, অভিযোগ কর্নারসহ বিভিন্ন তথ্য থাকতে হবে।

শুধু ওয়েবসাইট করে বসে থাকলেই হবে না, প্রতিদিন ক্লাস শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে শ্রেণি অনুসারে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উপস্থিতি-অনুপস্থিতির তথ্য নিজস্ব ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে। ওয়েবসাইট নিয়মিত হালনাগাদে ও সমস্যা সমাধানে কম্পিউটার ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবল না থাকলে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে এ কাজ চালাতে হবে। সম্ভব হলে প্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে একজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়মিতভাবে ওয়েবসাইট হালনাগাদের কাজ করতে হবে।

খসড়া পরিপত্রে আরো বলা হয়েছে, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজাররা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হালনাগাদের তথ্য তদারকি করবেন। তাঁরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবেন। তাঁরা তিন মাস পর পর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরে এ-সংক্রান্ত তথ্য পাঠাবেন।

(ওএস/এএস/এপ্রিল ১৮, ২০১৫)