যশোর প্রতিনিধি : যশোরে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) আয়োজিত বৈশাখী মেলার নামে যা হচ্ছে, তাতে অতিষ্ঠ হতয়ে উঠেছে শহরের গাড়ীখানা রোডের বাসিন্দারা। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বৈশাখী মেলায় মাইক বাজিয়ে অতিষ্ঠ করে তুলেছে সাধারণ মানুষের। শুধু গাড়ীখানা রোডের বাসিন্দাদের নয়, পুরো শহরের মানুষ এখন অতিষ্ঠ। কোন মানুষ শান্তিতে এ রাস্তায় চলাচল করতে পারে না। সব সময় যানজট লেগেই থাকে এ সড়কে। এছাড়া শুরুতে লটারির নামে জেলার মানুষের পকেট কাটা হয় ডাকাতের মত। জেলা পুলিশ প্রশাসনের সবচেয়ে বড় কর্তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহয়তায় এ মেলায় চলায় কেউ কোন কথা বলতে সাহস পায় না। এইচএসসি পরীক্ষার মধ্যে গাড়ীখানা রোডে মাইক বাজিনো হয় বৈশাখী মেলায় অনেক অভিভাবক নি:শব্দে সব কিছু হজম করে চলেছে।

জানা গেছে, চলতি ১৪২২ খ্রিস্টাব্দে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) যশোরে আয়োজন করে বৈশাখী মেলার। মেলার শুরুতে চলে লটারি খেলা। প্রতিদিন শহরে ২০ থেকে ৩০ টি রিকসা মাইক দিয়ে শহরে ছেড়ে দেয়া হয়। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে ইজিবাইক ছাড়া হয়। তারা বিভিন্ন উপজেলায় গিয়ে লটারির টিকিট বিক্রি করে। সেসময় মাইক বাজিয়ে শহরের মানুষদের অতিষ্ঠ করে তোলা হয়। এ ঘটনা জেলা প্রশাসনকে মানুষ ফোন করে জানালে জেলা প্রশাসন লটারি বন্ধ করে দেয়া হয়। কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান আবারও লটারি চালু করেন। শহরের মানুষ পুলিশ সুপারকে জানালে তিনি লটারি বন্ধ করতে বাধ্য হন। লটারি বন্ধ হলেও বন্ধ হয়নি সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার। পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) যশোরের সভাপতি পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানের স্ত্রী হওয়ায় কেউ এ নিয়ে কথা বলতে সাহস পায় না। পুলিশের বিরুদ্ধে কথা বলে কেউ বিপদে পড়তে চায় না। যে কারণে অনেকের ছেলে-মেয়ের এইচএসসি পরীক্ষা থাকলেও টু-শব্দ পর্যন্ত করেনি।

মেলার পার্শবর্তী এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহিম জানান, তার মেয়ে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। কিন্তু পুলিশের বৈশাখী মেলার নামে এভাবে মাইক বাজানোর অত্যাচারে তার মেয়ে ভালোভাবে পড়াশুনা করতে পারেনি। এজন্য তিনি মেয়ের পরীক্ষার রেজাল্টা নিয়ে তিনি চিন্তিত। এই মেলার কারণে সাধারণ মানুষ রাস্তা দিয়ে হেটে পর্যন্ত চলাচল করতে পারছে না। রিকসা-ইজিবাইক প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে যশোর ট্রাফিক পুলিশ অফিসের সামনে। এছাড়া সব সময় যানজট লেগেই থাকছে এখানে। শহরের পুরাতন কবসা এলাকার বাসিন্দা আজিজুর রহমান পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে জানান, পুলিশের বাণিজ্য করতে এখন আর কোন জায়গা বাদ রাখছে না। সব জায়গায় তাদের বাণিজ্য চলছে। যশোর শহরের মানুষের কষ্ট দিয়ে তাদের বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। কেউ কথা বলতে সাহস পায়না। প্রতিদিন যানজট আর রিকসা-ইজিবাইকের ছোট-বড় দুর্ঘটনায় মানুষ নাকাল হলেও পুলিশ তাদের বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

শহরের গাড়ীখানা রোডের বাসিন্দা রাজু আহমেদ জানান, মেলায় মাইক বাজানোর একটা সময় সীমা থাকা উচিত। কিন্তু পুলিশের কোন সময় সীমা নেই। তাদের মনে যা কিছু উদায় হয়, তারা তাই করে। যেন এমন দেশটা এখন পুলিশীর। এ ব্যাপারে যশোর পুলিশের মুখপাত্রর ০১৭১৩৩৭৪১৫৬ নং মোবাইলে ফোন করা হলে কেউ রিসিভ করেনি।


(জেকেএম/পি/মে ১৪, ২০১৫)