নিউজ ডেস্ক : সিংহ বনের রাজা। এমন কোনো পশু নেই যে সিংহের ভয়ে প্রকম্পিত নয়। বানর থেকে শুরু করে হাতি পর্যন্ত ত্রিসীমানায় সিংহকে দেখলে এক মুহূর্ত দেরি না করে দৌড়াতে ভোলে না। কিন্তু সময়ে সিংহকেও দৌড়াতে হয়। কেনিয়ার মাসাই মারা সাফারি পার্কে সম্প্রতি মহিষের তাড়া খেয়ে প্রাণে বেঁচে গেছে এক সিংহ।

পাঠক হয়তো মনে করছেন মহিষের তাড়া খেয়ে পালিয়েছিল যেই সিংহ সেটি আসলে বাচ্চা সিংহ। অবশ্য এটা ভাবাই স্বাভাবিক, কিন্তু কে জানতো একটি পূর্ণবয়স্ক সিংহই এভাবে তাড়া খাবে মহিষের হাতে।

মাসাই মারা সাফারি পার্কের দুই স্থায়ী আলোকচিত্রীর কল্যাণে সিংহের তাড়া খাওয়ার অভূতপূর্ব দৃশ্যটি দেখা সম্ভব হয়েছে। যদিও এই দুজনের কল্পনাতেই ছিল না এমন কিছু ঘটার।

সকাল বেলা নাস্তা সেরে দুই আলোকচিত্রী বের হলেন পার্কে ছবি তুলবেন বলে। ঘুরতে ঘুরতে যখন তারা প্রায় ক্লান্ত, তখনই ঘটনার সাক্ষী হয়ে যান তারা। জঙ্গল থেকে একটু বাইরের মাঠে চড়ে বেড়াচ্ছিল এক পাল মহিষ। হঠাৎ করেই এক পাল মহিষের মাঝে শিকারের নেশায় চলে আসে এক সিংহ। প্রাথমিকভাবে সিংহকে মহিষেরা তেমন একটা পাত্তা দিচ্ছিল না দেখে সিংহের সাহস বেড়ে যায়। আর সাহস দেখাতে গিয়ে যখনই একটি মহিষকে আক্রমন করার চেষ্টা করে সিংহ তখনই বাধে বিপত্তি। একপাল মহিষ সংঘবদ্ধ হয়ে পাল্টা আক্রমন করে বসে সিংহটিকে। এতেই জান নিয়ে দৌড় দেয় বেচারা সিংহ। দৌড়ের মাঝে কয়েকবার মহিষের চোখা শিংয়ের গুতোও খেতে হয়েছে অবশ্য। কিন্তু প্রাণ বাঁচানো দরকার তাই কোনো দিকে না তাকিয়েই সিংহ বেচারা দৌড় দেয়। মহিষেরা সিংহকে এমন ভাবেই তাড়া করে যে তাদের কাছেই যে দুই আলোকচিত্রী বসে নিশ্চিন্তে ছবি তুলে যাচ্ছেন সেদিকে কোনো খেয়ালই ছিল না তাদের।

বিপরীতে, আলোকচিত্রীদের ভাষায়-পুরো ঘটনাটি এমন ভাবে ঘটে যেন এটা কোনো চলচ্চিত্রের মহড়া হচ্ছে। যাহোক, শেষমেষ এই ছবিগুলো কার্টারস নিউজ এজেন্সি হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পত্রিকায় জায়গা পায়। বিশেষত যারা প্রাণীদের নিয়ে কাজ করেন তাদের জন্য এই ছবিগুলো সত্যিই দুর্দান্ত কাজের। আলোকচিত্রী রেনল্ডের ভাষায় অভিজ্ঞতা বর্ননা করতে গেলে, ‘আপনি সিংহের চোখে ভয় দেখতে পাবেন। মহিষেরা যে এত দ্রুত সংঘবদ্ধ হয়ে সিংহটিকে আক্রমন চালালো তা বলার বাইরে। সিংহ দ্বিতীয় মুহূর্ত ভাবারও কোনো সময় পায়নি। সোজা এক দৌড়ে নিরাপদ দূরত্বে চলে যায়।’

(ওএস/এএস/জুন ১০, ২০১৫)