বাগেরহাট প্রতিনিধি : লাগাতার ভারী বর্ষণে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলার নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকার রাস্তাঘাট বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জনদূর্ভোগ চরমে পৌছেছে। কোন কোন এলাকায় বৃষ্টির পানি নামতে না পারায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।

এদিকে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দুটি দ্বিতল ভবনের ছাদ থেকে অবিরাম পানি ঝরতে থাকায় ঝুকিঁপূর্ন ভবন দু’টি থেকে গুরুত্বপূর্ন সরঞ্জাম সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এই ভবন দুটির অধিকাংশ কক্ষগুলোর ছাঁদের পলেস্তার খসে পড়ছে এবং ছাঁদ চুইয়ে পানি পড়ে আসবাবপত্র ভিজে যায়। শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসন এই ভবনের কক্ষগুলোর দাপ্তরিক গুরুত্বপূর্ন কাগজপত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম সরিয়ে নেয়া শুরু করে। এদিকে গনপূর্ত বিভাগের পরামর্শে জেলা প্রশাসন অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ২/১ টি কক্ষে বল্লি (গাছ) দিয়ে ঠেস দিয়েছে। যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করছে জেলা প্রশাসন।

বাগেরহাট জেলা কালেক্টরেট ভবনের অধিকাংশ কক্ষ ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে ভারী বর্ষনে দ্বিতীয় তলায় ছাঁদ চুইয়ে পানি পড়ায় বিভিন্ন দপ্তরের জিনিষ পত্র নষ্ট হচ্ছে। অনেক স্থানে ছাদের আস্তরন খসে পড়েছে। পিলার গুলিতে দেখা দিয়েছে ফাটল। এ অবস্থায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয় ও আদালত এবং রাজস্ব শাখা, জুডিশিয়াল মুন্সি খানাসহ অধিকাংশ দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের অফিস কাযক্রম পরিচালনা করতে পারছেন না। গত ১৯৯৬ সালে ২৭ জানুয়ারি বাগেরহাট জেলা কালেক্টরেট ভবন উদ্বোধন করা হয়। তার পর থেকেই জেলা প্রশাসনের যাবতীয় কার্যক্রম চলছে এই ভবনে।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মো: জাহাংগীর আলম সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের বিভিন্ন কক্ষ পরিদর্শন করে কর্মচারীদের বিভিন্ন আসবাপত্র ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে দ্রুত সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন।

শুক্রবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে বাগেরহাট সদর উপজেলার কাড়াপাড়া, ষাটগুম্বুজ, ডেমা, রাধাবল্লব, কাশিমপুর ও বাগেরহাট শহর সংলগ্ন বাসস্টান্ড এলাকার গবরদিয়া গ্রামের নিম্নাঞ্চল বৃষ্টি পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া জেলার শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, রামপাল, ফকিরহাট, মোল্লাহাট, চিতলমারী ও কচুয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নিন্মাঞ্চলে প্ল-াবিতসহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

গবরদিয়া এলাকার মাসুম শেখ বলেন, ‘একটানা বৃষ্টির পানিতে রাস্তায় হাটু পানির কারনে আমাদের এলাকার জনসাধারনের চলাচলে খুব সমস্য হচ্ছে। ছোট শিশুদের দেখা দিয়েছে পানি বাহিত নানা রোগ। এভাবে বৃষ্টি হতে থাকলে ঘরে পানি উঠতে বেশি সময় লাগবে না।

রাধাবল্লব এলাকার দিনমজুর চাঁন মিয়া বলেন, বৃষ্টির পানিতে নামতে না পারায় আমরা পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। ঘরের উঠানে পানি উঠে যাওয়ায় রান্নাবান্নার বন্দ রয়েছে। আমাদের অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।

কাড়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ বশিরুল ইসলাম বলেন, কাড়াপাড়া ইউনিয়নের কিছু এলাকায় বৃষ্টির কারনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে কিছু সার্থনেসী মহল গোরবদিয়া এলাকার একমাত্র প্রবাহিত খালটি ভরাট করার কারনে বৃষ্টিতে ওই এলাকায় জলাবদ্ধাতা সৃষ্টি হয়েছে।

(একে/এএস/জুন ২৬, ২০১৫)