মাদারীপুর প্রতিনিধি :টানা কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে আড়িয়াল খাঁ নদে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। মাদারীপুরের নিম্নাঞ্চল প্ল¬াবিত হয়েছে। পাশাপাশি প্রবল বর্ষণে মাদারীপুর শহরের নিচু এলাকা প্ল¬াবিত হয়েছে। সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পৌরসভার নিচু এলাকায় পানি নিস্কাশন না হওয়ায় জলাবদ্ধাতার সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আড়িয়াল খা নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচর, ছিলারচর, চরনাচনা, কালিকাপুর, মাদ্রা, শ্রীনদী, ধুরাইল গ্রামে নদের পানি প্রবেশ করেছে।

এছাড়াও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদারীপুর শহর রক্ষা বাধ ও লঞ্চঘাট এলাকা এখন হুমকির মুখে পড়েছে।মাদারীপুর ১নং পুলিশ ফাড়ী, মাদারীপুর জেলা জজ কোর্টের সাবেক বিশেষ পিপি এডভোকেট আহসানুল হক খান, সাংবাদিক আলী আকবর খোকার বাসভবনসহ আশেপাশের অনেক বাড়ি, দোকানপাট এখন হুমকির মুখে পড়েছে।

অপরদিকে প্রবল বর্ষণে শহরের থানতলী, পানিছত্র, খাগদী পাগদী, পুরানবাজার কলেজরোডসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সড়কের রাস্তার পাশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে গরমের স্বস্তি মিললেও নিচু এলাকার মানুষ কিছুটা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম নদের পানি বৃদ্ধির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গত ১২ ঘন্টায় আড়িয়াল খাঁ নদের পানির কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধি পরিমাপ হিসেবে গত ১২ ঘন্টায় ২.২৭ সেন্টিমিটার পানির লেভেল রয়েছে। তবে পানি বৃদ্ধি পেলেও বিপদসীমার অনেক নিচে রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান বলেন, মাদারীপুর শহর রক্ষা বাধ এলাকায় ইতিমধ্যে যে ফাটল সৃষ্টি হয়েছিলো তা মেরামত করা হয়েছে। শহর রক্ষা বাধ যাতে কোন ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় স্লাব মজুদ রয়েছে। প্রয়োজনে সেগুলো ফেলা হবে।

অপরদিকে রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরের মিল্কভিটা সড়কের পাশে বৃষ্টিতে হাটু পানি হয়েছে। এতে খুচরা ব্যবসারীরা বেশ দুর্ভোগে পড়েছে।

এ ব্যাপারে টেকেরহাটের ব্যবসায়ী নাজমূল হক বাসু বলেন, এটা টেকেরহাটের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। চক্ষু হাসপাতাল, কিন্ডারগার্টেন, পল্লী বিদ্যুৎ অফিসসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিস, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ কয়েকশত লোকের আবাস্থল এই সড়কেই। এখানে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। শীঘ্রই আমরা এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ চাই।’

মাদারীপুর পৌর এলাকা উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি গোলাম আজম ইরাদ বলেন, বর্তমানে পৌর মেয়র পৌর এলাকায় সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে যে উন্নয়ন কর্মকান্ড করছেন তা বর্ষা মৌসুমের আগে করা উচিত ছিলো। কিন্তু বর্তমানে বর্ষা মওসুমে নির্মাণ কাজ অব্যাহত থাকলেও বর্ষার পানিতে তা ব্যাহত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সঠিক পরিকল্পনা নেয়া প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্যে বেশ কিছু ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কিছু নির্মাণ হয়েছে। বাকীগুলোও নির্মাণের চেষ্টা করা হবে। আশা করি, শীঘ্রই মাদারীপুর শহর জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত হবে। এখন আপাতত একটু ঝামেলা হচ্ছে।


(এএসএ/এসসি/জুন২৭,২০১৫)