লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের উপস্থিতেতে দু’গ্রামবাসীর মধ্যে ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় মহিলাসহ উভয় পক্ষের ৬ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষের হামলায় ৬টি বসত বাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। আহতদেরকে লোহাগড়া, নড়াইল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দিঘলিয়া ইউপি’র কোলা গ্রামের সুলতান মৃর্ধার স্ত্রীর সাথে তার আপন ভাই সাখাওয়াত মৃর্ধার স্ত্রীর মধ্যে টিউবওয়েলের পানি নিয়ে বৃহস্পতিবার ঝগড়া-ঝাটির ঘটনা ঘটে।

এর জের ধরে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কোলা গ্রামের সুলতান মৃর্ধার জামাই চর মল্লিকপুর গ্রামের পোটল শেখের ছেলে ফরিদ শেখ মোটর সাইকেল যোগে কোলা গ্রামে উপস্থিত হয়ে চাচা শ্বশুর সাখাওয়াত মৃর্ধা ও তার স্ত্রী কে ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে সাখাওয়াত ও তার স্ত্রী একই গ্রামের ছানোয়ার শেখের বাড়িতে আশ্রয় নেয়।

এ সময় ফরিদ শেখ চাচা শ্বশুর সাখাওয়াত মৃর্ধা (৪৬) ও তার স্ত্রী শারমিন বেগম (৪০)কে মারধোর করে। মারধোরের একপর্যায়ে গ্রামবাসী ফরিদকে ধরে ফেলে মারধোর করে মোটর সাইকেলসহ আটকিয়ে রাখে। ফরিদ মোবাইলের মাধ্যমে আটকের ঘটনাটি পার-মল্লিকপুর গ্রামের মাতুবরদের অবহিত করেন।

খবর পেয়ে সাবেক মেম্বর দুলোল ঠাকুর ও এম এম রাশেদ হাসানের নেতৃত্বে ৭০/৮০ জনের একদল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র রাম দা, ছ্যান দা, লাঠি ও হকিস্টিক নিয়ে চড়াও হয়ে মনু মিয়া শেখ, মাহবুব শেখ, ইস্রফিল শেখ, শাহবুর শেখ, বাবুল শেখ ও ফেলুন শেখের বাড়ি ভাংচুর করে ফিল্মী স্টাইলে ফরিদকে উদ্ধার করে মোটর সাইকেল নিয়ে পার-মল্লিকপুর গ্রামে চলে আসে।

বাড়ি ভাংচুরের সময় উভয় গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে গেলে মনু মিয়া শেখ, জাকির শেখ, আলম চৌধুরী, শাহনাজ বেগম, আরমান ঠাকুর, ফরিদ শেখ আহত হয়। সংঘর্ষের সময় লোহাগড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) শিমুল দাসের নেতৃত্বে একদল পুলিশ উপস্থিত থাকলেও সংঘর্ষ ঠেকাতে পারে নাই।

এ ব্যাপারে উপ-পরিদর্শক (এস আই) শিমুল দাস বলেন, ‘পার-মল্লিকপুর গ্রামবাসীদের অতর্কিত আক্রমনে জনবলের অভাবে আমাদের কিছু করার ছিল না। তবে সংঘর্ষ থামানোর জন্য বারংবার চেষ্টা করেছি’। আহতদেরকে লোহাগড়া, নড়াইল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) শেখ বিপ্লব সাহা পুলিশের উপস্থিতিতে সংঘর্ষের ঘটনা অস্বীকার করে জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নড়াইলের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি।

(আরএম/এএস/জুলাই ০৩, ২০১৫)