ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের পশ্চিম বাঁশাটি গ্রামে শুক্রবার রাতে বাবা ও তিন ছেলেকে জবাই করে হত্যার পর শুক্রবার ভোরে পুলিশ হত্যাকারীদের এক জনের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ১ জনকে আটক করা হয়।

চাঞ্চল্যকর খুনের এ মিছিলে এলাকায় স্বজনদের মাঝে শোকের মাতম চলছে সেই সাথে চরম আতংকে গ্রামটি পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে।
ঘটনাস্থল ঘুরে, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তারবির নামায পড়ে নিজ ঘরে খেতে বসলে ওই গ্রামের কাঠমিস্ত্রি বিল্লাল মিয়া (৫২) ও তার ছেলে নবম শ্রেনির ছাত্র পাভেল মিয়া (১৬) কে কুপিয়ে এবং জবাই করে হত্যা করে নিহতের (বিল্লাল মিয়ার )ভাই ও তার ছেলেরা। এসময় পালাতে গেলে নবম শ্রেণির ছাত্র হিমেল (১৪) কে বাড়ির পশ্চিমে রাস্তায় এবং বাঁশাটি বাজার থেকে ফেরার পথে আরেক ছেলে ফরিদ মিয়া (৩২) কে জবাই করে হত্যা করে।

স্বামী সন্তানদের বাঁচাতে গিয়ে অস্ত্রের আঘাতে (বিল্লালের স্ত্রী) বানেছা(৪৮) মারত্মক আহত হলে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আধাঘন্টার এ নির্মমতায় ঘটনাটি সমগ্র গ্রাম ও আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়লেও হত্যাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
এদিকে বাবা সন্তানসহ চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডে হোতাদের একজন লাল মিয়ার ছেলে জামাল (২৬) র লাশ শনিবার সকালে বাড়ির পাশেই খালপাড় থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

বিল্লাল মিয়ার বোন কোকিলা বেগম (৫৮) জানান, ভাই লাল মিয়া ও তার ছেলেরা এ নির্মম হত্যাকা- ঘটিয়েছে। আগেরদিন (শুক্রবার) পুকুরে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে লাল মিয়া ও তার ছেলেদের সঙ্গে বোন কোকিলা ও তার সন্তাদের ঝগড়া হলে বিল্লাল বোনের পক্ষ নিলে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা ও জমি-জমা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে ভাই হয়ে এত বড় সর্বনাশ করতে পারে তা নিয়ে পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
এদিকে নিহত বিল্লালের ক্যান্সারে আক্রান্ত ছেলে কিরণ (২৬), প্রতিবন্ধী ছেলে রুবেল(২২) নিজ ঘরে অবস্থান করলেও সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মুক্তা(১২) পালিয়ে গিয়ে পাশেই মামার বাড়িতে অবস্থান করছে।
এলাকায় গিয়ে শোনা যায়, এ হত্যাকান্ডে লাল মিয়া ও তার দুই ছেলে ছাড়াও বাইরের কোন পেশাদার খুনীরা জড়িত থাকতে পারে।

নান্দাইল মডেল থানার ওসি সৈয়দ আবদুল্লাহ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের কারনেই এ হত্যাকান্ড ঘটতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে খোকন ভূইয়া নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ টহল চলছে। এএসপি সার্কেল মো. আখতারুজ্জামান বলেন ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। লাশ কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলা হয়নি।

(এপি/পিবি/জুলাই ০৪,২০১৫)