স্টাফ রিপোর্টার : বিশিষ্টজনরা বলেছেন, প্রয়াত সাংবাদিক এবিএম মূসা ও গিয়াস কামাল চৌধুরী দেশ ও দেশের গণতন্ত্রের জন্য যে ভূমিকা রেখেছেন, তা অবিস্মরণীয়।

তারা ছিলেন সারাদেশের সম্পদ। তাদের মতো গুণী ব্যক্তিত্বদের জায়গা পূরণ করার মতো কেউ এখন আর নেই। তাদের আদর্শকে ধারণ করতে পারলেই আমরা সফল হব।

জাতীয় এ দুই ব্যক্তিত্বকে নিয়ে আয়োজিত স্মরণ সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সভার আয়োজন করে ঢাকায় কর্মরত ফেনীর সাংবাদিকদের সংগঠন ফেনী সাংবাদিক ফোরাম।

সংগঠনের সভাপতি মীর আহম্মদ মীরুর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দৈনিক দেশ বাংলা সম্পাদক ড. ফেরদৌস আহমেদ কোরেশি, এফবিসিসিআই’র সাবেক দুই সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু ও এমএ কাসেম, এনসিসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান তোফাজ্জেল হোসেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি শওকত মাহমুদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার, কবি ও সাংবাদিক এরশাদ মজুমদার, আজকের সূর্যোদয়ের সম্পাদক খন্দকার মোজাম্মেলুল হক, দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক কাজী রফিক, ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক ফয়েজ উল্লাহ ভূইয়া, সাবেক সভাপতি মোতাহের হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক লোটন একরাম, এবিএম মূসার মেয়ে ড. শারমিন মূসা, গিয়াস কামাল চৌধুরীর ছেলে রফিক উম-মুনীর চৌধুরী প্রমুখ।

ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, “আজকের সাংবাদিকদের মধ্যে অনেকের হাতেখড়ি হয়েছে এবিএম মূসার হাত ধরে। কোনো সাংবাদিক কোনো অনুষ্ঠানে গেলে জানতে চাওয়া হতো- আপনি গিয়াস কামাল চৌধুরীকে চেনেন কি না। তার পরিচয় দিতে পারলে ওই সাংবাদিককে সাংবাদিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হতো। এমন ছিল তাদের ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে ছিলেন তারা অনেক বড়।”

তিনি বলেন, “এবিএম মূসা ও গিয়াস কামাল চৌধুরীকে হারিয়ে আমরা অসহায় বোধ করছি। তাদের স্থান পূরণ করার মতো আমাদের মাঝে আর কেউ রইল না। তাদের আমরা সম্মানিত করলে পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের সম্মানিত করবে।”

ড. ফেরদৌস আহমেদ বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান অবজারভারের যে ভূমিকা, তার পেছনে ছিলেন এবিএম মূসা। গিয়াস কামাল চৌধুরীও ছিলেন অনেক গুণে গুণান্বিত সাংবাদিক।”

ড. ফেরদৌস বলেন, “এবিএম মূসা সারাজীবন রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে দেশ ও জনগণের স্বার্থে কথা বলেছেন। কিন্তু মৃত্যুর পর তিনি রাজনৈতিক বিভাজনের শিকার হলেন। এটি খুবই দুঃখজনক। আমরা হয়তো ভবিষ্যতে অনেক খ্যাতিমান সাংবাদিক পাবো, কিন্তু তাদের দুজনের মতো মানুষ পেতে অনেক দিন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।”

আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, “এবিএম মূসা ছিলেন অসম্ভব আন্তরিক একজন মানুষ। গিয়াস কামাল চৌধুরীর সুপারিশে অনেক মানুষের চাকরি হয়েছে। এ দুজন মানুষই ছিলেন অনেক গুণে গুণান্বিত। ফেনীর এ দুই কৃতিসন্তান সারা দেশের মর্যাদা বাড়িয়েছেন।”

শওকত মাহমুদ বলেন, “ফেনী জেলা নিজেই একটি মর্যাদাপূর্ণ জেলা। অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তির জন্ম হয়েছে এ জেলায়। এবিএম মূসা ও গিয়াস কামাল চৌধুরী দেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে নিজেদের পরিবার-পরিজনের দিকেও তাকাননি।”

তিনি বলেন, “এমপি হওয়া সত্ত্বেও এবিএম মূসার মরদেহ জাতীয় সংসদ প্লাজায় নেয়া হয়নি। গিয়াস কামাল চৌধুরী অনেক রাজনীতিবিদ তৈরি করেছেন। তাকে কি রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা যেতো না?”

বক্তারা দুই প্রখ্যাত সাংবাদিকের নামে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অথবা স্থাপনার নামকরণ করার দাবি জানান।

(ওএস/এস/মে ২০, ২০১৪)