ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : কালচে রঙের বির্বণ-দুর্গন্ধযুক্ত চাল ময়মনসিংহের গৌরীপুর খাদ্য গুদামে বৃহস্পতিবার বিতরণ করতে দেখা যায়। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৬০ হাজার ৬৪৪ জন হতদরিদ্রের মাঝে বিতরণের জন্য এই চাল দেয়া হয়।

১০ কেজির স্থলে দেয়া হয়েছে ৬/৭ কেজি করে চাল। সরকারের ক্রয়কৃত ২৪ টাকার প্রতি কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫/৭ টাকা কেজি দরে। নতুন বস্তায় পুরাতন চাল ক্রয়ের অভিযোগও রয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১নং মইলাকান্দা ইউনিয়নে ৫ হাজার ৩৬৪ জন, ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নে ৫ হাজার ২৬০ জন, ৩নং অচিন্তপুর ইউনিয়নে ৫ হাজার ৩৮৬ জন, ৪নং মাওহা ইউনিয়নে ৫ হাজার ২৪ জন, ৫নং সহনাটী ইউনিয়নে ৫ হাজার ৯০১ জন, ৬নং বোকাইনগর ইউনিয়নে ৬ হাজার ৭৪ জন, ৭নং রামগোপালপুর ইউনিয়নের ৭ হাজার, ৮নং ডৌহাখলা ইউনিয়নে ৬ হাজার ৩৬০ জন, ৯নং ভাংনামারী ইউনিয়নে ৪ হাজার ৮শ, ১০নং সিধলা ইউনিয়নে ৫ হাজার ৫৪ জন ও পৌরসভার ৪ হাজার ৪২১ জন হতদরিদ্র মানুষকে দেবার জন্য ১০ কেজি করে চালের সরকারি বরাদ্দ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) খাদ্যগুদামে নৈশ প্রহরী মোঃ লাল মিয়া চাল বিতরণ করছিলেন। রামগোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম শিকদারের নিয়া আসা হ্যান্ডট্রলিতে চাল লোড করছিল শ্রমিকরা। প্রতিটি বস্তার ফাঁটা অংশে বেড়িয়ে পড়ছে কালচে রঙের পেঁপের বিচির মতো পোকাযুক্ত চাল। তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ জানান ইউনিয়নের সদস্যরাও। বিতরণকাজে নিয়োজিত লাল মিয়াও স্বীকার করেন-চাল দুর্গন্ধযুক্ত।

পৌর শহরের কয়েকজন সুবিধাভোগী জানান, এ চাল মানুষ কেন, গো-খাদ্যও হিসাবে ব্যবহার যোগ্য নয়।

খাদ্যের নামে হতদরিদ্র মানুষের নিকট তুলে দেয়া হচ্ছে বিষ, জানান অচিন্তপুর ইউনিয়নের আব্দুল আলী। তিনি বলেন, তাই ১০ কেজি চালের স্লিপ ৫০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন।

গৌরীপুর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেএম নাসির উদ্দিন জানান, ময়মনসিংহ সিএসডি থেকে এ চাল এসেছে। যেভাবে এসেছে সেভাবেই বিতরণ করা হচ্ছে।

দুর্গন্ধযুক্ত কালো রঙ ধারণের বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দূর-রে-শাহওয়াজ জানান, এ চাল বদলে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নিরুপায় খাদ্য গুদামের কর্মকর্তারা বলেন, যা আছে তাই দিতে হবে। খাদ্য গুদামের একটি সিন্ডিকেট চক্র এ চাল ক্রয় করে গুদামে নতুন চালের সাথে মিশ্রণ করে বিক্রি করে বলে অভিযোগ রয়েছে।

(এসআইএম/পিএস/জুলাই ১৭, ২০১৫)