বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটে মায়ের হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচার দাবী করেছে মেয়ে জাকিয়া বেগম।

বুধবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে আহুত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহতের মেয়ে যশোরের অভয়নগর উপজেলার শুভদাড়া গ্রামের নজরুল ফকিরের স্ত্রী জাকিয়া বেগম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লেখ করেন, বিগত ২০০৬ সালে তার বড় ভাই বাগেরহাট সদর উপজেলার বাদোখালী গ্রামের তবীর শেখকে তার স্ত্রী শাহিনা বেগম ও পরকিয়া প্রেমিক হানিফ শেখ এবং তার সহযোগীরা হত্যা করে।

ভাই নিহত হওয়ার ৪ মাসের মধ্যে ঘাকত হানিফ শেখকে তার নিহত ভাইয়ের স্ত্রী বিয়ে করে। এ সময় নিহত তবীর শেখের ছেলে হাসিব শেখকে (মিলন) তার মা শাহিনা বেগম ফেলে রেখে যায়। পরে মিলনকে তার দাদী আনোয়ারা বেগম ও চাচা কবির শেখ লালন পালন করে বড় করে তোলেন।

কিছুদিন পূর্বে মিলনকে তার মা শাহিনা বেগম পিতার রেখে যাওয়া সম্পত্তি বুঝে নেয়ার জন্য কুমন্ত্রণা দিতে থাকে। একপর্যায়ে গত ২৪ জুন মিলন শেখ, তার মা শাহিনা বেগম ও কয়েকজন সহযোগী আনোয়ারা বেগমের ব্যবহার্য টিভি, সিডিসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহত আনোয়ারা বেগমের ছেলে কবির শেখ বাগেরহাট সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আনোয়ার বেগম ও তার ছেলেকে হত্যার হুমকি দেয় মিলন।

গত ১ জুলাই রাতে আনোয়ার বেগমকে (৭৫) পিটিয়ে ও শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়। পরের দিন খুলনায় চাকুরী করা নিহতের ছেলে কবির শেখ খবর পেয়ে বাড়ি এসে তালা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে লাশ উদ্ধার করে।

জাকিয়া বেগম সাংবাদিকদের তার মৃত মায়ের কয়েকটি ছবি দেখিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বলেন, লাশের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। ঘরের মেঝেতে ছিল রক্তের দাগ এবং হত্যাকারীদের পায়ের চিহ্ন। ঘরের আসবাবপত্র তছনছ অবস্থায় পাওয়া যায়। এসব দেখে স্থানীয় সকলেই ধারণা করেছিল তাকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু থানা পুলিশ তাদের নিকট থেকে হত্যা মামলা গ্রহণ করেনি বলে তিনি জানান।

অবশেষে নিরুপায় হয়ে নিহতের ছেলে কবির শেখ বাদী হয়ে জুডিসিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিনি দাবী করেন, প্রভাবশালীরা হত্যাকারীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ফলে তার নিহত ভাইয়ের মত মায়ের হত্যার বিচার নিয়েও তার শঙ্কা রয়েছে। তিনি প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

(এমএইচএম/পিএস/জুলাই ২২, ২০১৫)