স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জে প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ সাতজনের অপহরণ ও খুনের মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের একাধিক বালাখানার সন্ধান পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এসব বালাখানায় সন্ধ্যা নামলেই, কখনও বা দিনে-দুপুরেও বসত জমজমাট আড্ডা। বালাখানায় গিয়ে মদ, নারী আর জুয়ায় মত্ত হয়ে পড়ত অনেক হাইপ্রোফাইল ব্যক্তি।

প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আমলা, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সমাজের উঁচুস্তরের লোকজনই ছিল তার এই বালাখানার অতিথিদের তালিকায়।

জানা যায়, নূর হোসেনের বাড়ির উত্তরে মাছের খামারের মাঝে ঘর নির্মাণ করে সেই ঘরে পার্টি বসত যা জলসা ঘর নামে পরিচিত ছিল। সিদ্ধিরগঞ্জে আটি হাউজিং এলাকায় মিজি ভবন-১ নামে একটি ষষ্ঠতলা ভবনের কয়েকটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে সেখানেও মাদক ও পতিতা নিয়ে আড্ডা বসাত নূর হোসেন। সিদ্ধিরগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে কাঁচপুর ল্যান্ডি স্টেশনের ওপরের তৃতীয় তলায় বসত রাতভর জলসা। নূর হোসেনের নিজ বাড়ির দোতলায়ও মাঝে মধ্যে পার্টি বসত।

এ ছাড়া শিমরাইল ট্রাকস্ট্যান্ডে কাউন্সিলর অফিসের পশ্চিম পার্শ্বের একটি কক্ষেও মাঝে মধ্যে পার্টি বসাত নূর হোসেন। অশ্লীল নৃত্য আর সুন্দরী নারীরাই ছিল তার জলসা ঘরের আকর্ষণ। নৃত্যের আসরের সঙ্গে চলত মাদকের জমজমাট আসর। জুয়ার আড্ডা। হাই প্রোফাইল ব্যক্তিদের এসব জলসায় অতিথি করে নূর হোসেন দুই হাতে কামিয়ে নিয়েছে অর্থ, বিত্ত, বৈভব। করায়ত্ত করেছে ক্ষমতা আর আধিপত্য।

নূর হোসেনের বালাখানার অতিথি হয়ে যারা তাকে অপরাধ জগতে মুকুটহীন সাম্রাজ্য গড়তে সাহায্য করেছে তাদের তালিকা তৈরি করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এ তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছেন না রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আমলা, প্রশাসন বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও। ইতোমধ্যে চমকে দেওয়ার মতো অনেকেরই নাম চলে এসেছে তদন্তকারীদের হাতে। ভিআইপি অতিথিদের তালিকা তৈরি হওয়ার খবরে প্রশাসনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। নূর হোসেনের জলসা ঘর ও জলসা ঘরে কারা অতিথি ছিলেন সেই ব্যাপারে তার কথিত স্ত্রী কাউন্সিলর নীলাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দারা। তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ খবর জানা গেছে।

(ওএস/এটিআর/মে ২১, ২০১৪)