আহসানুল করিম, বাগেরহাট : বাগেরহাটে অতি বর্ষনে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় সদর উপজেলায় ১১৩ হেক্টর জমির পানের বরজ নষ্ট হয়েগেছে। সরকারী হিসেবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৮৫০ জন পান চাষী। বাগেরহাট সদর উপজেলার সিংড়াই গ্রামের মমতাজ বেগম (৪০) নামের এক পান চাষির মতে বাগেরহাটের সহা¯্রাধিক পান চাষি ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। মমতাজ বেগম আরো বলেন, ২০/২৫ বছর ধরে ২৬ শতক জমিতে পানের চাষ করে পুরো সংসারটাই চলছিল।

বর্তমানে বরাজটি সম্পুর্ন ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে প্রায় দু,লাখ টাকার দেনাগ্রস্থ হয়ে পড়েছি। ব্র্যাক এনজিও থেকে ২৬ হাজার টাকা নেওয়া ঋণ কিভাবে পরিশোধ করব তা ভেবে পাচ্ছি না।

সোমবার সকালে ক্ষতিগ্রস্থ ওই এলাকায় গেলে পান চাষি আব্দুজ জলিল, সাদেক আলী , সাঈদ আকুঞ্জি বলেন, আমাদের একমাত্র এই পান চাষের উপর নির্ভরশীল হয়ে জীবন-জীবিকা চলে। কিন্তু কয়েক দিনের টানা বর্ষনে ও জলাব্ধতার কারনে সহা¯্রাধীক চাষিরা সর্বশান্ত হয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বাগেরহাটের অন্যতম প্রধান অর্থকারী ফসল পানের বিপর্যয় ঠেকাতে উদ্যোগ না নেয়া হলে ভবিষাতের পানের চাষে আগ্রহ হারাবে চাষিরা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ক্ষতিগ্রস্থ পান চাষিরা সরকারি সহায়তার দাবী জানিয়েছেন।

রোজার প্রথম সপ্তাহ থেকে লাগারতার বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারনে বাগেরহাট সদর উপজেলার সিংড়াই, পাটরপাড়া, কাটাল, দেয়ালবাটি ও কাড়াপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের সহা¯্রাধিক পানের বরাজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অধিকাংশ বরাজের কোন চি‎হ্ন নেই। মাটির সাথে মিশে গেছে। এছাড়া ফসলী জমির ক্ষেতখামার নষ্ট হয়ে গেছে। এসব এলাকার চাষিরা পরিবার পরিজন নিয়ে অসহায়ের মত জীবন যাপন করছেন।

এলাকাবাসি জানান, নদী ও খালের নাব্যতা হ্রাস ও এক শ্রেনীর প্রভাবশালীরা সরকারী খাল দখল করে মাছ চাষ করায় পানি নিস্কাশন না হওয়ায় জলাবদ্বতার চরম দূর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে। তারা একাধিক স্লুইজগেট নিমার্ন, খাল খনন করে পানি নিস্কাশনের দাবী জানান।
বাগেরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা জানান, সদর উপজেলার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে পান চাষ করা হয়। এর মধ্যে ১১৩ হেক্টর জমির পানের বরাজ নষ্ট হয়েগেছে। উপজেলার ৮৫০ জন ক্ষতিগ্রস্থ পান চাষীর তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তালিকা তৈরির কাজ অব্যহত রয়েছে বলে তিনি জানান।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো: জাহাংগীর আলম বলেন, জেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্থ পান চাষিদের তালিকা তৈরী করার জন্য কৃষি বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছে। তালিকা প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে বলে তিনি জানান।

(একে/এসসি/জুলাই,২০১৫)