সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : পছন্দের জমি কিনতে না পেরে হুমকি ধামকি দিয়েও লাভ না হওয়ায় এক ব্যবসায়িকে বার বার মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগে সাবেক সাংসদ ও জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা এইচএম গোলাম রেজার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহষ্পতিবার দুপুর ১২টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন জেলার শ্যামনগর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের মাহমুদুর রহমান।

লিখিত বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান বলেন, তার বাবা ব্যবসায়ি আব্দুর রশীদ (৬৮) ডায়াবেটিকস আক্রান্ত ও সড়ক দুর্ঘটনায় শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েছেন। উপজেলার গোপালপুর পিকনিক কর্ণারের গেটের সামনে তার মা রেহানা বেগমের নামীয় ১৫ কাঠা জমি কেনার জন্য ২০০৯ সাল থেকে তৎকালিন সাংসদ ও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কৃত এইচএম গোলাম রেজা ওই জমি কিনে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করে আসছেন।

সম্প্রতি উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের জয়নগরে দু’টি শিশুকে গাছের সঙ্গে শিকল ও দড়ি দিয়ে বেঁধে ছবি তুলে সংবাদ মাধ্যমে প্রচার ও সরকারের ভাব মুর্তি নষ্ট করার অভিযোগে গত ২৬ জুলাই শ্যামনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি আইনে দায়েরকৃত এ মামলার বাদি (৪২নং) জাতীয় পার্টির যুব সংগঠণ যুব সংহতির নেতা জয়নগর গ্রামের আনিসুর রহমান তার বাবাকে এ মামলায় আসামী শ্রেণীভুক্ত করেন। মামলার বাদি মূল ঘটনার বিবাদমান দু’ পক্ষের কেউ না হলেও জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা এইচএম গোলাম রেজার ঘনিষ্ট। তাই পুলিশের উপর চাপ সৃষ্টি করে গোলাম রেজা তাকে দিয়ে এ মামলায় তার বাবা আব্দুর রশীদকে জড়িয়েছেন বলে তিনি মনে করেন। মামলার খবর পাওয়ার পর থেকে তার অসুস্থ বাবা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুর রহমান আরো উল্লেখ করেন, জমি না পাওয়ার ক্ষোভে গোপালপুর গ্রামের জাতীয় পার্টির সক্রিয় কর্মী ও গোলাম রেজার ঘনিষ্ট বলে পরিচিত নারী পাচার মামলার আসামী আশুরা বেগমকে(৩৫) দিয়ে ২০১১ সালে চাচী ফজিলা বিবি(৫০) ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় তাকে ও তার বাবাকে আসামী শ্রেণীভুক্ত করা হয় গোলাম রেজার পরামর্শে। পুলিশ ওই মামলায় তাদেরকে অব্যহতি দেয়। এ ছাড়াও একটি পাচার মামলার ভিকটিমকে বাড়িতে লুকিয়ে রাখার কাল্পনিক অভিযোগে গোলাম রেজা প্রভাব খাটিয়ে সম্প্রতি তার বাবাকে গ্রেফতার করান। যদিও পুলিশ তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। গত ৭ জুলাই পুলিশ ভিকটিম লুকিয়ে রাখার ঘটনা মিথ্যা বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয়। বর্তমানে জমি নেওয়ার জন্য গোলাম রেজা তার বাবার উপর চাপ ও হুমকি অব্যহত রেখেছেন।

পুলিশের উপর প্রভাব খাটিয়ে গোলাম রেজার দলীয় ও কাছের লোকজন দিয়ে একের পর এক হয়রানিমূলক মামলা থেকে অব্যহতি পাওয়ার জন্য সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মহাপুলিশ পুরিদর্শক, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা ও মানবাধিকার সংগঠণের নেতৃবৃন্দদের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

এ ব্যাপারে সাবেক সাংসদ এইচ এম গোলাম রেজার সঙ্গে বৃহষ্পতিবার বিকেল চারটা পাঁচ মিনিটে তার ০১৭১৩-০২৯৮৪৪ নং মোবাইলে তিন বার চেষ্টা করেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক কারো চাপে মামলা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নিলেও তদন্ত না করে কাউকে আসামী হিসেবে গ্রেফতার করা হবে না। ঘটনার যথাযথ তদন্ত করেই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।


(আরএনকে/এসসি/জুলাই৩০,২০১৫)