বাগেরহাটে খুলে দেয়া হয়েছে ২০৭টি সাইক্লোন শেল্টার, মংলা ও সুন্দরবনে রেড অ্যার্লাট
বাগেরহাট প্রতিনিধি :বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় কোমেন মোকাবেলায় সম্ভাব্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বাগেরহাটের প্রশাসন। দুর্যোগ মোকাবেলায় বাতিল করা হয়েছে জেলার সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে জেলার অভ্যন্তরীণ ও ঢাকাগামী সব ধরনের লঞ্চসহ নৌচলাচল। জেলার ২০৭টি সাইক্লোন শেল্টার খুলে দেয়ায় বিকাল থেকে সেখানে অতংকিত হাজার-হাজার মানুষ আশ্রয় নিচ্ছে।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বন্দরে অ্যালার্ড-৩ জারি করে। ফলে বন্দর জেটিসহ আউটার এ্যংকরেজে অবস্থানরত সকল জাহাজে সকাল থেকে পণ্য ওঠা-নামার কাজ বন্ধ রয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ র্দূযোগ মোকাবেলায় কন্টোল রুম খুলে সকল জাহাজ ও লাইটারেজ জাহাজগুলোকে আউটার এ্যংকরেজে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কোমেলর ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সর্তকতা ‘রেড অ্যালার্ড’ জারি করেছে সুন্দরবন বিভাগ। সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরর ছুটি বাতিল করে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সর্বোচ্চ সর্তকতায় থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। সুন্দরবন বিভাগ বিভাগ দুটি কন্ট্রোল খুলেছে। সুন্দরবন বিভাগের সকল নৌযানগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। মংলা কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের সকল স্টেশন, আউট পোস্ট, জাহাজ এবং বোট সমূহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। দূযোগ পরর্বতী সময়ের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপের অংশ হিসাবে ত্রান বিতরণ,বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সংখক মেডিক্যাল টিম ও উদ্ধারকারী দল গঠন করেছে। জরুরী র্দূযোগ পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরনের জন্য ২টি জাহাজ ও ২ টি হারবার পেট্রোল বোটসহ বিভিন্ন হাইস্পীড বোটসমূহ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, মংলাা কোস্টগার্ড কর্মকর্তা লেপটেন্যান্ট বিএন এমএ রাহাতুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার সকালে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভায় সার্বক্ষনিক দুর্যোগ প্রস্তুতি মনিটরিং এর জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫টি কন্ট্রল রুম খোলা হয়েছে। মাইকিং করে জেলা উপকূলীয় উপজেলা শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, রামপাল ও মংলা এলাকায় জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে একাধিক মেটিকেল টিম ও সেচ্ছ্বাসেবকদের। এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের ছুটি বাতিল করে তাদের কর্মস্থলে থাকতে বলা হয়েছে। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ বুধবার সন্ধা থেকে ৪টি সাইক্লোন সেল্টারসহ সব বন অফিসগুলোতে জেলে-বনজীবীরা আশ্রয় নিয়েছে। সুন্দরবনের ছোট-ছোট খালে কয়েক শ’ মাছ ধরা ট্রলার আশ্রয় নিয়েছে। সুন্দরবনের সব চর ও নদী থেকে সব জেলে-বনজীবীদের র্যাব ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা সরিয়ে এনেছে।
বাগেরহাটে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেজ্ঞের এসিএফ কামাল আহম্মেদ সন্ধায় জানান, ঘূর্ণিঝড় কোমেনের প্রভাবে সন্ধায় সুন্দরবনে জলোচ্ছ্বাসে তিন থেকে চার ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে বলে এসিএফ জানান। সন্ধার সাথে-সাথেই বাগেরহাটের উপকূলীয় এলাকা জুড়ে ঘূর্ণিঝড় আতংকা ছড়িয়ে পড়েছে। সুপার সাইক্লোন সিডরে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সাউথখালীর সাইক্লোন শেল্টারগুলো আতংকিত মানুষে ভরে গেছে বলে স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছে।
(একে/এসসি/জুলাই৩০,২০১৫)