জকিগঞ্জ প্রতিনিধি : গোষ্ঠি গত দ্বন্দ্ব, এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে জকিগঞ্জের বীরশ্রী ইউনিয়নের মুমিনপুর গ্রামে শুক্রবার সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার ভোরে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দুই জন নিহত হয়েছেন। নিহত ফজলুল হক কুটলাই (৩৫) মুমিনপুর গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে। ঘটনার দিন নিহত হন বিপক গ্রামের মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে রঘুরাশি বাজারের ব্যবসায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছালেক আহমদ(৩৬)। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে মুমিনপুর গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে ফারুক আহমদ বাদী হয়ে ২৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭/৮জনকে আসামী করে জকিগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত তিনজনকে শুক্রবার রাতেই আটক করেছে। আটককৃতরা হলো মুমিনপুর গ্রামের মাসুক আহমদের ছেলে সোহেল আহমদ (২৭), হাফিজুর রহমানের ছেলে মারজান আহমদ (২২) ও ফারুক আহমদের ছেলে সাদিকুর রহমান (১৮)।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, গোষ্ঠি নিয়ে প্রভাব বিস্তার নিয়ে র্দীঘ কয়েক বছর থেকে দুই গোষ্ঠির মাঝে বিরোধ চলছিল। মুমিনপুর গ্রামের ময়না মিয়ারপুত্র এনাম আহমদ অপর পক্ষের একই গ্রামের বশির আহমদের পুত্র ফারুক আহমদের বিরুদ্ধে কয়েকদিন আগে অনলাইন একটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে নতুন করে বিরোধের সূত্রপাত ঘঠে। পরে স্থানীয় সালিশদের মধ্যেস্থতায় এনাম অনলাইন পত্রিকা থেকে সংবাদটি প্রত্যাহার করে। পরবর্তী গ্রামে একটি হিন্দু বাড়ীতে উভয় যাওয়া আসা নিয়ে আবারোও দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ নিয়ে গত শুক্রবার উভয় গোষ্ঠির লোকজন জুম্মার নামাজের পর সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। নিহত দুই পরিবারে চলছে স্বজন হারানোর শোকের মাতম। নিহত ছালেকের মা, স্ত্রী, নাবালক দুই ছেলে, নাবালিকা ৪মেয়ে রয়েছে। অপরদিকে ফজলুল হক কুটলাই মিয়ার মা, স্ত্রী, ৫ মেয়ে ১ ছেলে রয়েছে। এ প্রতিবেদকসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা, তদন্তকারী কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি উপস্থিত হলে উভয় পরিবারে কান্নার রুল পড়ে। এসময় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখে উপস্থিত সকল শোকে মর্মাহত হন। উভয় পরিবার অসচ্ছল। এদিকে মামলার আসামীরা গ্রেপ্তার এড়াতে এলাকা ছাড়া। অনেকে বাড়ীতে গিয়ে তালা ঝুলানো দেখা যায়। খবর নিয়ে জানা যায় ঘটনার পর পর তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। এজাহারভুক্তদের মধ্যে অনেকেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও আসামী করা হয়েছে বলে দাবী করে তাদের আত্মীয় স্বজন।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজিব মন্ডল জানান, জড়িত ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও জনান, বর্তমানে তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উভয় লাশ দাফনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়নি।

(এসপি/পি/অাগস্ট ০৮, ২০১৫)