নিউজ ডেস্ক :  চীনের উত্তরাঞ্চলীয় বন্দর শহর তিয়ানজিনে বড় ধরনের বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১২ জনে দাঁড়িয়েছে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার বাতাসের দিক পরিবর্তনের ফলে বিস্ফোরণস্থলে নতুন করে আগুন জ্বলে ওঠে এবং বিষাক্ত গ্যাস লোকালয়ে চলে আসার শঙ্কা তৈরি হওয়ায় দুটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয় কর্তৃপক্ষ।

তবে ঠিক কতজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য চীনা গণমাধ্যমে দেওয়া হয়নি।

চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থলে এখনও অন্তত ৯৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন, যাদের ৮৫ জনই দমকলকর্মী।

তিয়ানজিনের দমকল প্রধান ঝোউ তিয়ান বলেছেন, যে গুদামে বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেখানে বিভিন্ন ধরনের বিপজ্জনক রাসায়নিক ও বিস্ফোরকের মজুদ ছিল। বিস্ফোরণে বিভিন্ন ধরনের উপাদান মিশে যাওয়ায় ঘটনাস্থলে যে কোনো সময় রাসায়নিক বিক্রিয়া কিংবা বিস্ফোরণ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

বুধবার গভীর রাতে বন্দরের কাছে ওই গুদামে ত্রিশ সেকেন্ডের ব্যবধানে দুই দফা বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের ধাক্কায় আশেপাশের বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়।

দেড়কোটি জনসংখ্যার এই শহরে কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেও অধিবাসীরা বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট কম্পন টের পেয়েছেন।

শুক্রবার উদ্ধারকারীদল ধ্বংসস্তুপের মধ্য থেকে একজন জীবিতকে উদ্ধার করেন। বিস্ফোরণের ৩২ ঘন্টা পর ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়।

নিহতদের মধ্যে অন্তত ২১ জন দমকলকর্মী রয়েছেন। বহু দমকলকর্মী এখনো নিখোঁজ।

যে গুদামে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে, তার মালিক রুইহাই লজিস্টিকস কোম্পানি। তাদের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, গুদামে বিভিন্ন বিপজ্জনক রাসায়নিকসহ ঘনীভূত গ্যাস ও দাহ্য তরল ছিল।

সিনহুয়ার খবরে বলা হয়, চীনের সামরিক বাহিনীর রাসায়নিক বিশেষজ্ঞরা বিস্ফোরণস্থলে বিষাক্ত গ্যাসের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখছেন এবং উদ্ধারকারীকর্মীদের সুরক্ষিত পোশাক পরতে বলা হয়েছে।

এদিকে পরিবেশের ওপর এ দুর্ঘটনার প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তিয়ানজিনের বাসিন্দারা।

তিয়ানজিনের পরিবেশ সুরক্ষা ব্যুরোর প্রধান জানিয়েছেন, ওই এলাকায় দূষণের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করে দেখা হচ্ছে। তবে আপাতত দূষণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো গেছে বলে দাবি করেছেন চীনা কর্মকর্তারা।

(ওএস/এসসি/আগষ্ট ১৬,২০১৫)