চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষায় বিপ্লব হচ্ছে। দেশের পরিমণ্ডল ছাড়িয়ে বিদেশেও প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ, গবেষক-বিজ্ঞানীরা ব্যাপকভাবে সাফল্য পাচ্ছে। বিশেষ করে, বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা অনেক দূর এগিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, তরুণরাই বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। আগের প্রজন্ম মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে। বর্তমান প্রজন্মের তরুণরাই এ দেশকে সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাবে।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) ১৩ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নানকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।

অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পথে আমরা অনেকদূর এগিয়েছি। বর্তমানে প্রকৌশল ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আমাদের বিদেশ নির্ভরতা খুব কম। বিশেষ করে, তেল-গ্যাস সেক্টরের মত এক সময়ের বিদেশ নির্ভর খাতে এখন দেশের প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদরা সুনাম ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। বিদেশ নির্ভরতা পেছনে ফেলে উল্টো দেশের প্রকৌশল, প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানীরা বিদেশেও সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। এ দেশের একজন তরুণ গবেষক সফলতার পরিচয় দিয়ে বর্তমানে পদার্থবিজ্ঞান শাখায় নোবেল জয়ের লক্ষ্যেও এগিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর মত বড় প্রকল্প আমরা নিজেদের উদ্যোগে বাস্তবায়ন করছি। উন্নতির অনেক সূচকে আমরা পার্শ্ববর্তী দেশসমূহকে পিছনে ফেলে এগিয়েছি। এ অর্জন একসময় অকল্পনীয় ছিল। আমরা বিশ্বকে নিজেদের সক্ষমতা দেখিয়ে দিয়েছি। নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেনও এখন বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসায় পঞ্চমুখ। আমরা এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগকেও তোয়াক্কা করি না। বাধা বিপত্তিকে আমরা জয় করে চলেছি। যে দেশের মানুষ এতোসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ জয় করেছে, সে দেশের মানুষ পরাজিত হতে পারে না।

অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন চুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল আলম ও পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার পালিত। সভাপতিত্ব করেন রেজিস্ট্রার (অতি. দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী।

চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সেশনজটমুক্ত, অস্থিরতামুক্ত একটি সুন্দর সুখী পরিবার হিসেবে চুয়েট এগিয়ে যাচ্ছে। উচ্চ শিক্ষা-গবেষণায় চুয়েট নানা সাফল্য লাভ করে দেশে-বিদেশে সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। আমরা আগামী দিনে এই অগ্রযাত্রা ও সফলতা আরও বহুগুণে বৃদ্ধি করতে সার্বিক প্রয়াস চালাচ্ছি।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, চুয়েটের বর্তমান সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ ধরে রাখতে পারলে আমাদের সাফল্য আরও বিস্তৃত হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বদিউস সালাম, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি ডা. মীর মুরতজা রেজা খান, কর্মচারী সমিতির সভাপতি সুকোমল বিকাশ শীল, ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে জাহিদ মাহাদী। সঞ্চালনায় ছিলেন পুরকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আয়শা আক্তার।

দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল রক্তদান ও বৃক্ষরোপন কর্মসূচি, পতাকা উত্তোলন ও আনন্দ র‌্যালি, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ প্রভৃতি।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৫)